কোনো শীর্ষক নেই

0
ভূমি সংস্কার অধ্যাদেশ, ১৯৮৪
(১৯৮৪ সালের ১০ নং অধ্যাদেশ)
(২৬ জানুয়ারী,
 ১৯৮৪)
যেহেতু ভূমির উত্‍পাদন সর্বোচ্চকরণের এবং ভূ-মনিব ও বর্গাদারগণের মধ্যে উন্নততর সম্পর্ক নিশ্চিতকরণের উদ্দেশ্যে ভূমির মধ্যস্বত্ব, ভূমির জোতস্বত্ব ও ভূমির হস্তান্তর সম্পর্কিত আইন সংস্কার করা সমীচীন, সেহেতু এক্ষণে ১৯৮২ সালের ২৪শে মার্চের ঘোষণার পন্থানুসরণে এবং তত্‍পক্ষে তাহাকে সমর্থনকারী সকল ক্ষমতা প্রয়োগ করতঃ রাষ্ট্রপতি নিম্নবর্ণিত অধ্যাদেশ প্রণয়ন ও জারী করিতে মনস্থ করেন :
প্রথম অধ্যায়
প্রারম্ভিক
ধারা-১। (সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রারম্ভ) :
(১) এই অধ্যাদেশ ‘ভূমি সংস্কার অধ্যাদেশ, ১৯৮৪’ নামে অভিহিত হইবে।
(২) সরকার সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা যেই তারিখ নির্দিষ্ট করিবেন, সেই তারিখেই ইহা বলবত্‍ হইবে।
ধারা-২। (সংজ্ঞার্থে) :
এই অধ্যাদেশ-বিষয়ে বা প্রসঙ্গে পরিপন্থি কোনো কিছু না থাকিলে –
ক) ‘বর্গাদার’ বলিতে এইরূপ ব্যক্তি বুঝায়, যিনি আধি, বর্গা বা ভাগ বলিয়া সাধারণভাবে পরিচিত পদ্ধতিতে অপর কোনো ব্যক্তির জমি চাষ করিয়া থাকেন, এই শর্তে যে, সে ঐ জমির উত্‍পন্ন ফসলের একটি অংশ উক্ত ব্যক্তিকে অর্পণ করিয়া থাকেন;
খ) ‘বর্গাচুক্তি’ বলিতে এইরূপ চুক্তিকে বুঝায়, যাহার অধীনে কোনো ব্যক্তি বর্গাদার হিসাবে কোনো জমি চাষ করিয়া থাকেন;
গ) ‘বর্গা জমি’ বলিতে বর্গাদার হিসাবে কোনো ব্যক্তির চাষাধীন কোনো জমি বুঝায়;
ঘ) ‘পরিবার’ বলিতে কোনো ব্যক্তির সম্পর্কে ঐ ব্যক্তিকে এবং তাহার স্ত্রী, পুত্র, অবিবাহিতা কন্যা,পুত্রবধু, পৌত্র ও অবিবাহিত পৌত্রীকে অন্তর্ভুক্ত করিয়া থাকে :
তবে শর্ত থাকে যে, পিতামাতা হইতে স্বাধীনভাবে পৃথক মেসে বসবাস করিয়া আসিলে এবং তাহার নিজ নামে ইউনিয়ন অভিকর প্রদান করিয়া থাকিলে, এমন সাবালক বা বিবাহিত পুত্র এবং তাহার স্ত্রী, পুত্র ও অবিবাহিতা কন্যা একটি পৃথক পরিবার গঠন করে বলিয়া গণ্য হইবে;
ঙ) ‘বাস্তু’ বলিতে এক মানানসই বিঘার অধিক নহে, এমন একটি এলাকা ব্যাপিয়া বহির্গৃহ, পুকুর ও তত্‍সংযুক্ত ঘেরাও জায়গাসমূহ সমেত একটি বাসগৃহ বুঝায়।
তবে শর্ত থাকে যে, যেইক্ষেত্রে এইরূপ এলাকা এক মানানসই বিঘার অধিক হয়, সেইক্ষেত্রে উদ্বৃত্ত জমি বাস্তু বলিয়া গণ্য হইবে না;
চ) ‘মালিক’ বলিতে কৃষি জমির অধিকারী কোনো ব্যক্তি বা সংগঠন, প্রতিষ্ঠান বা কর্তৃপক্ষকে বুঝায়;
ছ) ‘মনিব’ বলিতে কোনো বর্গাজমি সম্পর্কে সেই ব্যক্তিকে বুঝায়, যাহার নিকট হইতে বর্গাদার বর্গাচুক্তিধীনে চাষের জন্য জমি লাভ করিয়া থাকে;
জ) ‘ব্যক্তিগত চাষ’ বলিতে কোনো ব্যক্তি কর্তৃক –
১. তাহার নিজ শ্রম দ্বারা, বা
২. তাহার পরিবারের কোনো সদস্যের শ্রম দ্বারা, বা
৩. তাহার নিজের শ্রম বা পরিবারের কোনো সদস্যের শ্রম অনুপূরণ করিবার জন্য মজুরিতে নিযুক্ত কোনো কর্মচারীর বা শ্রমিকের শ্রম দ্বারা-তাহার নিজের জমির বা তাহার নিজের জন্য বর্গাজমির চাষ বুঝায়;
ঝ) ‘নির্ধারিত’ বলিতে এই অধ্যাদেশের অধীনে প্রণীত বিধি দ্বারা নির্ধারিত বুঝায়;
ঞ) ‘নির্ধারিত আপিল কর্তৃপক্ষ’ বলিতে এই অধ্যাদেশের অধীনে আনয়নযোগ্য আপিলের সকলগুলির বা যেই কোনোটির শুনানীর উদ্দেশ্যে সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা সরকার কর্তৃক নিযুক্ত কর্তৃপক্ষকে অথবা ঐরূপ উদ্দেশ্যের জন্য বিধিমালায় নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বুঝায়;
ট) ‘নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ’ বলিতে আপিল শুনানীর উদ্দেশ্য ব্যতীত এই অধ্যাদেশের উদ্দেশ্যসমূহের সকলগুলির বা যেই কোনোটির জন্য সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা সরকার কর্তৃক নিযুক্ত কর্তৃপক্ষকে অথবা ঐরূপ উদ্দেশ্যসমূহের জন্য বিধিমালায় নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বুঝায়;
ঠ) ‘উত্‍পন্ন ফসল’ বলিতে খড়, যেই কোনো শস্যের বৃন্ত ও অন্য যেই কোনো শস্যবিশেষ অন্তর্ভুক্ত করিয়া থাকে;
ড) ‘বিধিমালা’ বলিতে এই অধ্যাদেশের অধীনে প্রণীত বিধিমালা বুঝায়;
ঢ) ‘পল্লী এলাকা’ বলিতে পৌরসভার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত নহে, এমন যেই কোনো এলাকাকে বুঝায়।
ধারা-৩। (অন্যান্য আইন, ইত্যাদির উপর প্রাধান্য লাভকারী অধ্যাদেশ) :
বর্তমানে বলবৎ অন্য যেই কোনো আইনে অথবা যেই কোনো প্রথা বা রীতিতে অথবা যেই কোনো চুক্তি বা সাধনপত্রের অন্তর্গত বিপরীত (কার্যকারিতাযুক্ত) কোনো কিছু থাকা সত্ত্বেও এই অধ্যাদেশের বিধানাবলীর কার্যকারিতা বজায় থাকিবে।
দ্বিতীয় অধ্যায়
কৃষি জমির অধিগ্রহণ সীমিতকরণ
ধারা-৪। (কৃষি জমির অধিগ্রহণ সীমিতকরণ) :
(১) যিনি বা যাহার পরিবার ষাট মানানসই বিঘা অপেক্ষা অধিক কৃষি জমির মনিব রহিয়াছেন, এমন কোনো মালিক হস্তান্তর, উত্তরাধিকার, দান বা অন্য যেই কোনো উপায়ে নতুন কোনো কৃষি জমি অর্জন করিবেন না।
(২) যিনি বা যাহার পরিবার ষাট মানানসই বিঘা অপেক্ষা কম কৃষি জমির মনিব রহিয়াছেন, এমন একজন মালিক যেই কোনো উপায়ে নতুন কৃষি জমি অর্জন করিতে পারিবেন, কিন্তু ঐরূপ নতুন জমি তাহার মনিবানায় থাকা কৃষি জমি সমেত ষাট মানানসই বিঘার অধিক হইবে না।
(৩) যদি কোনো মালিক এই ধারার বিধানাবলী লঙ্ঘন করিয়া কোনো নতুন কৃষি জমি অর্জন করিয়া থাকেন, তাহা হইলে যেই পরিমাণ ষাট মানানসই বিঘার অতিরিক্ত হইবে, তাহা সরকারের নিকট অর্পিত হইবে এবং উত্তরাধিকার, দান বা ইচ্ছাপত্রের মাধ্যমে অধিগ্রহীত অতিরিক্ত জমির ক্ষেত্র ব্যতীত ঐভাবে অর্পিত জমির জন্য তাহাকে কোনো ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হইবে না।
(৪) (৩) উপধারা অনুযায়ী অতিরিক্ত জমির জন্য প্রদেয় ক্ষতিপূরণ যথানির্ধারিতব্য প্রকারে নিরূপণ ও প্রদান করিতে হইবে।
তবে শর্ত থাকে যে, এইখানে এইরূপ ক্ষতিপূরণ শুধুমাত্র অতিরিক্ত জমির অংশবিশেষের জন্য প্রদেয় হইলে সেইখানে ক্ষতিপূরণ নিরূপণ ও প্রদান সেই সকল অতিরিক্ত জমির অংশবিশেষের জন্য প্রদান করা হইবে, যাহা মালিক এতদপক্ষে নির্দিষ্ট করিয়া দিবেন।
তৃতীয় অধ্যায়
স্থাবর সম্পত্তির বেনামী লেনদেন নিষিদ্ধকরণ
ধারা-৫। (বেনামী লেনদেন চলিবে না) :
(১) কোনো ব্যক্তিই তাহার নিজ উপকারার্থে অন্য কোনো ব্যক্তির নামে কোনো স্থাবর সম্পত্তি ক্রয় করিতে পারিবেন না।
(২) যেইক্ষেত্রে কোনো স্থাবর সম্পত্তির মালিক রেজিষ্ট্রীকৃত দলিলের মাধ্যমে উহা হস্তান্তর বা ইচ্ছাপত্রবলে দান করিয়া থাকেন, সেইক্ষেত্রে ইহা অনুমান করিয়া নিতে হইবে যে, সেই দলিলে যথানির্দিষ্ট উক্ত সম্পত্তিতে নিহিত তাহার উপকারদায়ক স্বার্থ হস্তান্তর করিয়াছেন এবং হস্তান্তরগ্রহিতা বা উত্তরদায়-গ্রাহক মনিবের উপকারার্থে উক্ত সম্পত্তি ধারণ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে এবং মনিব উক্ত সম্পত্তিতে তাহার উপকারদায়ক স্বার্থ হস্তান্তর করিবার অভিপ্রায় করেন নাই অথবা হস্তান্তরগ্রহিতা বা উত্তরদায়-গ্রাহক মনিবের উপকারার্থে উক্ত সম্পত্তি ধারণ করিয়া থাকেন, ইহা প্রদর্শন করিবার জন্য মৌখিক বা দস্তাবেজামূলক কোনো সাক্ষ্যই কোনো আদালত বা কর্তৃপক্ষের সম্মুখে কোনো কার্যব্যবস্থায় গ্রহনযোগ্য হইবে না।
(৩) যেইক্ষেত্রে কোনো স্থাবর সম্পত্তি রেজিষ্ট্রীকৃত দলিলের মাধ্যমে কোনো ব্যক্তির নিকট হস্তান্তর করা হয়, সেইক্ষেত্রে ইহা অনুমান করিয়া লইতে হইবে যে, ঐ ব্যক্তি উক্ত সম্পত্তি তাহার নিজ উপকারার্থে অর্জন করিয়াছেন এবং যেইক্ষেত্রে ঐরূপ হস্তান্তরের পণ অপর কোনো ব্যক্তি প্রদান করিয়া থাকেন বা যোগান দেন, সেইক্ষেত্রে ইহা অনুমান করিয়া লইতে হইবে যে, ঐ অপর ব্যক্তি হস্তান্তর-গ্রহিতার উপকারার্থে ঐরূপ পণ প্রদান করিবার বা যোগান দেওয়ার অভিপ্রায় করেন এবং হস্তান্তরগ্রহিতা অপর কোনো ব্যক্তির উপকারার্থে বা পণপ্রদানকারী বা যোগানদার ব্যক্তির উপকারার্থে উক্ত সম্পত্তি ধারণ করেন, ইহা প্রদর্শন করিবার জন্য মৌখিক বা দস্তাবেজমূলক কোনো সাক্ষ্যই কোনো আদালত বা কর্তৃপক্ষের সম্মুখে কোনো কার্যব্যবস্থায় গ্রহণযোগ্য হইবে না।
চতুর্থ অধ্যায়
বাস্তু
ধারা-৬। (বাস্তু হইতে উচ্ছেদ ইত্যাদি চলিবে না) :
পল্লী এলাকায় মনিব কর্তৃক বাস্তু হিসাবে ব্যবহৃত কোনো জমি কোনো অফিসার, আদালত বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের দ্বারা আটক, ক্রোক, বাজেয়াপ্তকরণ বা বিক্রয়সহ সকল আইনগত প্রক্রিয়া হইতে অব্যাহতি পাইবে এবং ঐরূপ জমির মনিবকে কোনো উপায়েই উক্ত জমি হইতে বঞ্চিত বা বেদখল বা উচ্ছেদ করা যাইবে না।
তবে শর্ত থাকে যে, এই ধারার কোনো কিছুই কোনো আইনের অধীনে অনুরূপ বাস্ত অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না।
ধারা-৭। (বাস্তুর জন্য খাস জমির বন্দোবস্ত) :
(১) পল্লী এলাকায় বাস্তু হিসাবে ব্যবহৃত হওয়ার উপযুক্ত কোনো খাস জমি পাওয়া গেলে সরকার উক্ত জমি বন্দোবস্ত দেওয়ার সময় ভূমিহীন কৃষক ও শ্রমিকদের অগ্রাধিকার প্রদান করিবেন।
তবে শর্ত থাকে যে, কোনো ব্যক্তিকেই উপরোক্ত উদ্দেশ্যে পাঁচ কাঠার অধিক অনুরূপ কোনো জমি বরাদ্দ করা হইবে না।
(২) (১) উপধারার অধীনে বন্দোবস্তী কোনো জমি উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্য হইবে, কিন্তু হস্তান্তরযোগ্য হইবে না।
পঞ্চম অধ্যায়
বর্গাদারগণ
ধারা-৮। (বর্গাচুক্তির অধীনে চাষ) : 
(১) এই অধ্যাদেশের অন্যান্য বিধানাবলী সাপেক্ষে কোনো ব্যক্তিই তাহার জমি চাষ করিবার জন্য অপর কোনো ব্যক্তিকে অনুমোদন করিবেন না এবং কোনো ব্যক্তিই অপর কোনো ব্যক্তির জমি তাহাদের মধ্যে ঐ জমির উত্‍পন্ন ফসল ভাগ করিয়া নেয়ার শর্তে চাষ করিবেন না, যদি তাহারা অনুরূপ চাষের জন্য যথানির্ধারিতব্য ফরমে ও ধরনে একটি চুক্তি সম্পাদন করিয়া থাকেন।
(২) কোনো বর্গা চুক্তি ঐ বর্গা চুক্তিতে যেই তারিখ নির্দিষ্ট করা হইবে, সেই তারিখ হইতে আরম্ভ করিয়া পাঁচ বত্‍সরের মেয়াদের জন্য বৈধ থাকিবে।
ধারা-৯। (বিদ্যমান বর্গাদারদের স্বীকৃতি) :
(১) এই অধ্যাদেশের প্রারম্ভের অব্যবহিত পূর্বে অপর কোনো ব্যক্তির জমি বর্গাদার হিসাবে চাষকারী কোনো ব্যক্তি এই অধ্যাদেশ অনুযায়ী উক্ত জমি সংক্রান্ত বর্গাদার বলিয়া গণ্য হইবেন।
(২) এই অধ্যাদেশের প্রারম্ভের তারিখ হইতে নব্বই দিনের মধ্যে (১) উপধারায় বর্ণিত কোনো জমির মনিব বা বর্গাদার ৮ ধারা অনুযায়ী আবশ্যক একটি চুক্তি সম্পাদন করিবেন।
(৩) যদি পক্ষগণ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে চুক্তি সম্পাদন করিতে ব্যর্থ হন, তাহা হইলে তাহাদের মধ্যে যেই কোনো একজন চুক্তি সম্পাদন করানোর জন্য নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন পেশ করিতে পারিবেন।
(৪) নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ আবেদন গ্রহণের ষাট দিনের মধ্যে যেইরূপ উপযুক্ত মনে করিবেন, সেইরূপ অনুসন্ধান চালানোর পর আবেদনকারী উক্ত চুক্তি সম্পাদন করানোর অধিকারী কিনা, তত্‍সম্পর্কে সিন্ধান্ত গ্রহণ করিবেন।
(৫) যদি নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন যে, আবেদনকারী আবেদনে উল্লিখিত কোনো সম্পত্তি সংক্রান্ত চুক্তি সম্পাদন করানোর অধিকারী, তাহা হইলে কর্তৃপক্ষ বিরোধী পক্ষকে নির্দেশ গ্রহণের তারিখ হইতে দুই সপ্তাহের মধ্যে চুক্তি সম্পাদন করিবার জন্য নির্দেশ প্রদান করিবেন এবং যদি উক্ত পক্ষ চুক্তি সম্পাদন করিতে ব্যর্থ হন, তাহা হইলে কর্তৃপক্ষ উক্ত পক্ষের হইয়া ইহা সম্পাদন করিবেন।
(৬) এই ধারার অধীনে সম্পাদিত বর্গাচুক্তি এই অধ্যাদেশ প্রারম্ভের তারিখ হইতে কার্যকর বলিয়া গণ্য হইবে এবং ঐ তারিখ হইতে পাঁচ বত্‍সরের মেয়াদের জন্য বৈধ থাকিবে।
ধারা-১০। (বর্গাদারের মৃত্যুর পর বর্গাজমির চাষ) :
(১) যেইক্ষেত্রে কোনো বর্গাদার বর্গাচুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্বেই মারা যান, সেইক্ষেত্রে অনুরূপ চুক্তি শেষ না হওয়া পর্যন্ত অথবা এই অধ্যাদেশের অধীন বর্গাচুক্তির অবসান না হওয়া পর্যন্ত মৃত বর্গাদারের পরিবারের জীবিত সদস্যগণ বর্গাজমির চাষ অব্যাহত রাখিতে পারিবেন।
(২) যেইক্ষেত্রে বর্গাদার তাহার পরিবারে উক্ত জমি চাষ করার মতো অবস্থায় স্থিত কোনো ব্যক্তিকে না রাখিয়া মারা যান, সেইক্ষেত্রে জমির মনিব জমি ব্যক্তিগত চাষের অধীনে আনিতে পারিবেন অথবা অন্য কোনো বর্গাদার কর্তৃক উক্ত জমির চাষ অনুমোদন করিতে পারিবেন।
ধারা-১১। (বর্গাচুক্তির অবসান) : 
(১) নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিম্নোক্ত হেতু প্রদত্ত আদেশ কার্যে পরিণতকরণের ক্ষেত্র ব্যতীত কোনো মনিব বর্গাচুক্তি অবসান করিবার অধিকারী হইবে না-
ক) বর্গাদার কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ ব্যতিরেকে বর্গাজমি চাষ করিতে ব্যর্থ হইয়াছে।
খ) বর্গাদার কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ ব্যতিরেকে সংশ্লিষ্ট এলাকায় অবস্থিত উক্ত বর্গাজমির অনুরূপ কোনো জমিতে গড়ে যে পরিমাণ শস্য উত্‍পন্ন হয়, সেই পরিমাণ শস্য উত্‍পন্ন করিতে ব্যর্থ হইয়াছেন;
গ) বর্গাদার বর্গাজমি সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে কৃষি ব্যতিত অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ব্যবহার করিয়াছেন;
ঘ) বর্গাদার এই অধ্যাদেশের কোনো বিধান অথবা তদাধীনে প্রণীত বিধি বা আদেশ লঙ্ঘন করিয়াছেন;
ঙ) বর্গাদার তার চাষের অধিকার সমর্পণ বা স্বেচ্ছায় পরিত্যাগ করিয়াছেন;
চ) বর্গাজমি বর্গাদারের ব্যক্তিগত চাষের অধীন নহে; অথবা
ছ) মনিবের ব্যক্তিগত চাষের নিমিত্তে বর্গাজমির প্রকৃতই আবশ্যক হয়।
(২) যদি মনিব যুক্তিসঙ্গত কারণ ব্যতিরেকে (১) (ছ) উপধারার অধীন কোনো বর্গাচুক্তির অবসানান্তে কোনো জমি ব্যক্তিগত চাষাধীনে আনিতে ব্যর্থ হন কিংবা অনুরূপ অবসানের তারিখের চব্বিশ মাসের মধ্যে অপর কোনো বর্গাদার কর্তৃক দাখিলকৃত আবেদনের ভিত্তিতে উক্ত বর্গাদারের নিকট ঐ জমির দখল পুনরুদ্ধার করিয়া দিতে পারিবেন, যিনি উহার ভিত্তিতে এই অধ্যাদেশের অধীন বর্গাচুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়া অথবা বর্গাচুক্তির অবসান হওয়া পর্যন্ত ঐ জমির চাষ অব্যাহত রাখিবেন।
ধারা-১২। (বর্গাজমির উত্‍পন্ন ফসলের বিভাজন) :
(১) কোনো বর্গাজমির উত্‍পন্ন ফসল এইভাবে ভাগ করা হইবে, যথা –
ক) মনিব জমির জন্য এক-তৃতীয়াংশ গ্রহণ করিবেন;
খ) বর্গাদার শ্রমের জন্য এক-তৃতীয়াংশ গ্রহণ করিবেন; এবং
গ) মনিব বা বর্গদার বা উভয়ে তাহাদের বহনকৃত শ্রমের পরিব্যয় ব্যতীত চাষের পরিব্যয়ের সমানুপাতে এক-তৃতীয়াংশ গ্রহণ করিবেন।
(২) কোনো বর্গাজমির কাটা শস্য হয় বর্গাদারের মালিকানাধীন কোনো স্থানে অথবা মনিবের মালিকানাধীন কোনো স্থানে, যেইটাই বর্গাজমির নিকটতম হয়, অথবা পক্ষদ্বয়ের মধ্যে সম্মত অন্য কোনোস্থান মাড়াই ও বিভাজনের জন্য গোলাজাত করা হইবে।
(৩) বর্গাদার শস্য কাটার অব্যবহিত পরে মনিবের প্রাপ্য উত্‍পন্ন ফসলের অংশ মনিবের নিকট গ্রহণ করিবার জন্য প্রদান করিবেন এবং যখন মনিব উক্ত প্রদত্ত অংশ গ্রহণ করিয়া থাকেন, তখন প্রত্যেক পক্ষ উত্‍পন্ন ফসল হইতে তাহার গৃহীত পরিমাণের জন্য যথানির্ধারিতব্য ফরমে একটি রশিদ অপর পক্ষকে প্রদান করিবেন।
(৪) যদি মনিব বর্গদার কর্তৃক তাহার নিকট গ্রহণের জন্য প্রদত্ত উত্‍পন্ন ফসলের অংশগ্রহণ করিতে অথবা উহার জন্য রসিদ প্রদান করিতে অস্বীকার করিয়া থাকেন, তাহা হইলে বর্গাদার উক্ত ঘটনা লিখিতভাবে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষকে অবগত করিবেন।
(৫) নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ উক্ত অবগতি লাভের পর মনিবের উপর যথানির্ধারিতব্য ফরমে ও ধরনে একটি নোটিশ জারি করিবেন, তাহাকে নোটিশ জারির তারিখ হইতে সাত দিনের মধ্যে উত্‍পন্ন ফসলের অর্পন গ্রহণ করার আহ্বান জানাইয়া।
(৬) যদি মনিব নোটিশ জারির তারিখ হইতে সাত দিনের মধ্যে উত্‍পন্ন ফসলের অর্পন গ্রহণ করিতে ব্যর্থ হন, তাহা হইলে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ বর্গাদারকে উক্ত উত্‍পন্ন ফসল যেই কোনো সরকারী ক্রয় এজেন্সীর নিকট অথবা অনুরূপ এজেন্সীর অনুপস্থিতিতে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করিতে অনুমতি দিবেন।
(৭) যদি বর্গাদার উত্‍পন্ন ফসল বিক্রয় করে, তাহা হইলে তিনি বিক্রয়ের তারিখ হইতে সাতদিনের মধ্যে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের নিকট উক্ত বিক্রয়লব্ধ অর্থ জমা দিবেন।
(৮) নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ তাহার নিকট জমা-দেওয়া অর্থের পরিমাণ এবং বর্গাদার কর্তৃক বিক্রিত উত্‍পন্ন ফসলের পরিমাণ বিবৃত করিয়া যথানির্ধারিতব্য ফরমে একটি রসিদ বর্গাদারকে দিবেন এবং উক্ত রসিদ মনিবের নিকট উত্‍পন্ন ফসলের অংশ অর্পনের বাধ্যতা হইতে বর্গাদারকে মুক্ত করিবে।
তবে শর্ত থাকে যে, যেইক্ষেত্রে উত্‍পন্ন ফসলের কোনো পরিমাণ মনিবের পাওনা থাকে, সেইক্ষেত্রে অগ্রদত্ত বা অবিক্রিত উক্ত ফসলের পরিমাণের অর্পণ সম্পর্কে বর্গদারের বাধ্যতা অব্যাহত থাকিবে।
(৯) যেইক্ষেত্রে (৭) উপধারার অধীনে কোনো জমা করা হয়, সেইক্ষেত্রে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ উক্ত জমা সম্পর্কে মনিবকে যথানির্ধারিতব্য ফরমে ও ধরনে অবগত করিবেন।
(১০) যদি মনিব অনুরূপ জমা সম্পর্কে অবগতি লাভের তারিখ হইতে এক মাসের মধ্যে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে উক্ত জমাকৃত অর্থ গ্রহণ না করিয়া থাকেন, তাহা হইলে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ উক্ত অর্থ (সরকারী) কোষাগারে রাজস্ব জমা খাতে মনিবের আকলনে (অনুকূলে) জমা করিতে পারিবেন এবং যথানির্ধারিতব্য ফরমে ও ধরনে উক্ত জমা সম্পর্কে মনিবকে অবগত করিতে পারিবেন।
ধারা-১৩। (বর্গাদারের ক্রয়াধিকার) :
(১) যেইক্ষেত্রে মনিব বর্গাজমি বিক্রয় করিবার অভিপ্রায় করেন, সেইক্ষেত্রে তিনি বর্গাদারকে লিখিতভাবে এইমর্মে আহ্বান করিবেন যে, তিনি উক্ত জমি ক্রয় করিতে ইচ্ছুক রহিয়াছেন কিনা।
তবে শর্ত থাকে যে, যেইক্ষেত্রে মনিব উক্ত জমি কোনো সহশরিকের নিকট বা তাহার পিতা-মাতা, স্ত্রী,পুত্র, কন্যা কিংবা পৌত্রের নিকট বা তাহার পরিবারের অন্য কোনো সদস্যের নিকট বিক্রয় করিবেন,সেইক্ষেত্রে এই বিধান প্রযোজ্য হইবে না।
(২) বর্গাদার প্রস্তাব গ্রহণের তারিখ হইতে পনেরো দিনের মধ্যে উক্ত জমি ক্রয় করা বা না করা সংক্রান্ত তাহার সিদ্ধান্ত লিখিতভাবে মনিবকে অবহিত করিবেন।
(৩) যদি বর্গাদার উক্ত জমি ক্রয় করিতে সম্মত হন, তাহা হইলে তিনি জমিটির দাম সম্পর্কে মনিবের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করিবেন এবং তাহাদের মধ্যে যথাসম্মতব্য শর্তাবলীতে ক্রয় করিবেন।
(৪) যদি মনিব উক্ত সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বর্গাদারের নিকট হইতে জমিটি ক্রয় করা বা না করা সংক্রান্ত তাহার সিদ্ধান্ত মনিবকে অবহিত করিয়া থাকেন অথবা যদি বর্গাদার মনিবের দাবীকৃত দাম প্রদান করিতে সম্মত না হন, তাহা হইলে মনিব যাহাকে উপযুক্ত মনে করিবেন, সেইরূপ ব্যক্তির নিকট জমিটি বিক্রয় করিতে পারিবেন।
তবে শর্ত থাকে যে, মনিব উক্ত জমি বর্গাদার কর্তৃক প্রস্তাবিত দাম অপেক্ষা নিম্নতর দামে উক্ত ব্যক্তির নিকট বিক্রয় করিবেন না।
(৫) যেইক্ষেত্রে বর্গাদার ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তি বর্গাজমি ক্রয় করিয়া, সেইক্ষেত্রে উক্ত জমি সংক্রান্ত বর্গাচুক্তি ক্রেতার উপর বাধ্যতামূলক হইবে, যেন ক্রেতাই উক্ত চুক্তির একটি পক্ষ ছিলেন।
ধারা-১৪। (বর্গাজমির সর্বোর্ধ্বতা) :
(১) কোনো বর্গাদারই পনেরো মানানসই বিঘার অধিক জমি চাষ করিবার অধিকারী হইবে না।
ব্যাখ্যা : এই সর্বোর্ধ্বতা গণনায়, বর্গাদারের অধিকৃত যেই কোনো জমির এলাকা, এমনকি বর্গাদার হিসাবে তাহার চাষকৃত এবং সম্পূর্ণ ভোগ-বন্ধকের অধীনে তাহার দখলকৃত জমিও বিবেচনায় নেয়া হইবে।
(২) যদি কোনো বর্গাদার পনেরো মানানসই বিঘার অতিরিক্ত জমি চাষ করিয়া থাকেন, তাহা হইলে উক্ত অতিরিক্ত জমির ক্ষেত্রে বর্গাদার হিসাবে তাহার প্রাপ্য উত্‍পন্ন ফসলের অংশ সরকার বাধ্যতামূলকভাবে সংগ্রহ করিতে পারিবেন নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক এতদপক্ষে প্রদত্ত আদেশবলে।
ধারা-১৫। (চাষকার্যে বাধা-নিষেধ) :
(১) কোনো বর্গাচুক্তির বা সম্পূর্ণ ভোগ-বন্ধকের অধীনে অথবা চাকুরে বা শ্রমিক হিসাবে ব্যতীত কোনো ব্যক্তিই অপর কোনো ব্যক্তির জমি চাষ করিবেন না।
(২) যদি কোনো ব্যক্তি এই ধারার বিধানাবলী লঙ্ঘন করতঃ অপর কোনো ব্যক্তির জমি চাষ করিয়া থাকেন, তাহা হইলে সরকার উক্ত জমির উত্‍পন্ন ফসল বাধ্যতামুলকভাবে সংগ্রহ করিতে পারিবেন নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক এতদপক্ষে প্রদত্ত আদেশবলে।
ধারা-১৬। (বিরোধ) : 
(১) নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ বর্গাদার ও মনিবের মধ্যকার নিম্নবর্ণিত বিষয়সমূহ সম্পর্কিত প্রত্যেক বিরোধের মীমাংসা করিবেন:
ক) উত্‍পন্ন ফসলের বিভাজন বা অর্পণ,
খ) বর্গাচুক্তির অবসান,
গ) উত্‍পন্ন ফসলের গোলাজাতের ও মাড়াইয়ের স্থান।
(২) যদি (১) উপধারায় উল্লিখিত কোনো বিরোধ মীমাংসা এইরূপ কোনো প্রশ্ন উদ্ভুত হয় যে, কোনো ব্যক্তি বর্গাদার কিনা অথবা উত্‍পন্ন ফসলের অংশ কাহার নিকট অর্পণীয়, তাহা হইলে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ উক্ত প্রশ্নের নিষ্পত্তি করিবেন।
(৩) নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ কোনো বিরোধই গ্রাহ্য করিবেন না, যদি না এর নিকট উক্ত বিরোধ উদ্ভুত হওয়ার তারিখ হইতে তিন মাসের মধ্যে উহার মীমাংসার প্রার্থণা সম্বলিত কোনো দরখাস্তের মাধ্যমে বিরোধটি উত্থাপন করা হয়।
(৪) নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ পক্ষগণকে শুনানীর সুযোগ দান ও সাক্ষ্য উপস্থাপন এবং ইহা যেইরূপ প্রয়োজনীয় মনে করিয়া থাকেন, সেইরূপ তদন্ত অনুষ্ঠান করার পর দরখান্ত গ্রহণের তারিখ হইতে তিনমাসের মধ্যে এর সিদ্ধান্ত প্রদান করিবেন।
ধারা-১৭। (আপীল) :
(১) এই অধ্যাদেশের কোনো বিধানের অধীনে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত বা গৃহীত যেই কোনো আদেশ, সিদ্ধান্ত বা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে নির্ধারিত আপিল কর্তৃপক্ষ সমীপে আপিল চলিবে।
(২) (১) উপধারা অনুযায়ী আপিল আপিলকৃত আদেশ, সিদ্ধান্ত বা ব্যবস্থা লাভের বা অবগত হওয়ার তারিখ হইতে ত্রিশ দিনের মধ্যে দায়ের করিতে হইবে।
(৩) নির্ধারিত আপিল কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত (বলিয়া গণ্য) হইবে।
ধারা-১৮। (কার্যবিধি) : 
(১) নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ বা নির্ধারিত আপিল কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যাপার, বিরোধ বা আপিল নিষ্পত্তিতে যথানির্ধারিতব্য কার্যবিধি অনুসরণ করিবেন।
(২) নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের নিকট কোনো দরখাস্ত অথবা নির্ধারিত আপিল কর্তৃপক্ষের নিকট কোনো আপিল দাখিলকারী কোনো ব্যক্তি যথানির্ধারিতব্য ফি প্রদান করিবেন।
ধারা-১৯। (কার্যে পরিণতকরণ) :
নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের বা নির্ধারিত আপিল কর্তৃপক্ষের কোনো সিদ্ধান্ত বা আদেশ যথানির্ধারিতব্য ধরনে কার্যে পরিণত বা বলবত করিতে হইবে।
ষষ্ঠ অধ্যায়
বিবিধ
ধারা-২০। (এখতিয়ারে প্রতিবন্ধকতা) :
এই অধ্যাদেশের অধীনে কোনো কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত বা গৃহীত কোনো আদেশ, সিদ্ধান্ত, ব্যবস্থা বা কার্যব্যবস্থা সম্পর্কে কোনো আদালতেই প্রশ্ন তোলা যাইবে না এবং কোনো আদালতই অনুরূপ কোনো আদেশ, সিদ্ধান্ত, ব্যবস্থা বা কার্যব্যবস্থা সম্পর্কে কোনো মোকদ্দমা বা কার্যব্যবস্থা আমলে আনিবেন না।
ধারা-২১। (দণ্ড) :
যেই ব্যক্তি এই অধ্যাদেশের বা বিধিমালার কোনো বিধান অথবা এই অধ্যাদেশের বা বিধিমালার অধীনে কোনো কর্তৃপক্ষের প্রদত্ত কোনো আদেশ লঙ্ঘন করিয়া থাকেন, তিনি জরিমানা দ্বারা শাস্তিযোগ্য হইবেন, যাহা দুই হাজার টাকা পর্যন্ত বর্ধিত হইতে পারে।
ধারা-২২। (বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা) :
সরকার এই অধ্যাদেশের উদ্দেশ্যাবলী পুরণকল্পে সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বিধিমালা প্রণয়ন করিতে পারিবেন।
ভূমি সংস্কার বিধিমালা, ১৯৮৪
প্রথম অধ্যায়
প্রারম্ভিক
বিধি-১।
()               এই বিধিমালা ‘ভূমি সংস্কার বিধিমালা, ১৯৮৪’ নামে অভিহিত হইবে।
(২) এই বিধিমালায় বিষয় বা প্রসঙ্গে পরিপন্থী কোনোকিছু না থাকিলে-
(ক) ‘ফরম’ বলিতে এই বিধিমালার সহিত সংযুক্ত কোনো ফরম বুঝায়;
(খ) ‘অধ্যাদেশ’ বলিতেতে ‘ভূমি সংস্কার অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ ‘ (১৯৮৪ সালের ১০নং অধ্যাদেশ) বুঝায়;
(গ) ‘ধারা’ বলিতে উক্ত অধ্যাদেশের কোনো ধারা বুঝায়।
দ্বিতীয় অধ্যায়
নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ ও নির্ধারিত আপিল কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা
বিধি-২।
(১) কোনো নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ বা কোনো নির্ধারিত আপিল কর্তৃপক্ষ উক্ত অধ্যাদেশের অধীনে এর কর্তব্যকর্ম পালনের উদ্দেশ্যে-
(ক) প্রয়োজন হইলে, বাংলা ভাষায় সাক্ষ্য গ্রহণ করিবেন এবং যতদূর সম্ভব দেওয়ানী আদালতে কোনো মোকদ্দমার নিষ্পত্তির জন্য ১৯০৮ সালের দেওয়ানী কার্যবিধি সংহিতায় নির্ধারিত কার্যবিধি অনুসরণ করিবেন;
(খ) পরিদর্শন ও তদন্তের পূর্ববিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এর এখতিয়ারভূক্ত কোনো জমি বা ঘর-বাড়ীতে যেইরূপ প্রয়োজনীয় মনে করিবেন, সেইরূপ অফিসারসহ প্রবেশ করিতে পারিবেন;
(গ) লিখিত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে কোনো ব্যক্তিকে তাহার দখলে বা তাহার নিয়ন্ত্রাণাধীনে রহিয়াছে বা রহিয়াছে বলি বিশ্বাস হয়, এমন কোনো জমি বা জোত সম্পর্কিত কোনো বিবৃতি প্রদান ও অর্পণ করিবার জন্য অথবা কোনো রেকর্ড বা দস্তাবেজ পেশ করার জন্য নির্দেশ দিতে পারিবেন।
(২) উক্ত অধ্যাবেশের অধীনে কোনো তদন্তের উদ্দেশ্যে কোনো নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের বা কোনো নির্ধারিত আপিল কর্তৃপক্ষের ১৯০৮ সালের দেওয়ানী কার্যবিধি সংহিতার অধীন মোকদ্দমার বিচারের ক্ষেত্রে যেইভাবে বিধান করা হইয়াছে, সেই একইভাবে সাক্ষী হিসাবে কোনো ব্যক্তিকে তলব করিবার ও তাহার হাজিরা বলবত্‍ করিবার ক্ষমতা থাকিবে।
বিধি-৩।
(১) যদি কোনো বর্গাদারের কোনো কার্য ১১ ধারার (১) উপধারার (ক) হইতে (চ) পর্যন্ত দফাসমূহের বিধানাবলীর যেই কোনোটির আচরণের মধ্যে পড়ে অথবা যদি মনিবের ব্যক্তিগত চাষের জন্য উক্ত উপধারার (ছ) দফার অধীনে বর্গাজমির আবশ্যক হয়, তাহা হইলে মনিব বর্গাচুক্তির অবসানের জন্য নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিতভাবে পূর্ণ ঘটনাবলীল বর্ণনা করিয়া আবেদন করিবেন।
(২) নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ (১) উপধারার অধীনে কোনো দরখাস্ত প্রাপ্তির পর কার্যব্যবস্থা প্রস্তুত করিবেন এবং কেন উক্ত বর্গাচুক্তির অবসান করা হইবেনা- এই সম্পর্কে ‘ক’ ফরমে নোটিশ প্রাপ্তির তারিখ হইতে পনেরো দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য বর্গাদারকে নির্দেশ দিবেন।
(৩) বর্গাদারের নিকট হইতে উত্তর পাওয়ার পর অথবা বর্গাদার নোটিশে উল্লিখিত তারিখের মধ্যে কারণ দর্শাইতে ব্যর্থ হইলে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ যেইরূপ প্রয়োজনীয় মনে করিবেন, সেইরূপ তদন্তানুষ্ঠান করানোর এবং পক্ষগণকে শুনানির সুযোগদানের পর মামলার গুণাগুণের উপর লিখিতভাবে আদেশ প্রদান করিবেন।
বিধি-৪।
()               মনিব উত্‍পন্ন ফসলের তাহার প্রাপ্য অংশ গ্রহণ করিতে বা গ্রহণের রশিদ প্রদান করিতে অস্বীকার করিয়াছেন, এইমর্মে ১২ ধারার (৪) উপধারার অধীনে কোনো অবগতি লাভের পর নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ ‘খ’ ফরমে একটি নোটিশ জারির মাধ্যমে নোটিশ প্রাপ্তির তারিখ হইতে পনেরো দিনের মধ্যে মনিবকে বর্গাদারের নিকট হইতে উত্‍পন্ন ফসলের অর্পণ গ্রহণ করিতে এবং উহার জন্য রশিদ প্রদান করতে নির্দেশ দিবেন, যাহা করিতে ব্যর্থ হইলে ১২ ধারার (৬) উপধারার যেইরূপ বিধান করা হইয়াছে, সেইরূপ বর্গাদারকে উক্ত উত্‍পন্ন ফসল যে কোনো সরকারী ক্রয় এজেন্সীর নিকট অথবা অনুরূপ এজেন্সীর অভাবে বিক্রয় করিতে অনুমতি প্রদান করা  হইবে।
(২) যখন বর্গাদার ১২ ধারার (৭) উপধারার অধীনে অংশের বিক্রয় লব্ধ অর্থ নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের নিকট জমা দেন, তখন নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ তাহাকে ‘গ’ ফরমে একটি রশিদ প্রদান করিবেন।
(৩) (২) উপবিধির অধীনে উক্ত অর্থ প্রাপ্তির পর নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ অনুরূপ জমাকৃত অর্থ সম্পর্কে মনিবকে ‘গ’ ফরমে অবগত করিবেন এবং অবগতি লাভের তারিখ হইতে এক মাসের মধ্যে উক্ত অর্থ গ্রহণ করিবার জন্য তাহাকে নির্দেশ দিবেন। যদি মনিব অবগতিপত্রে নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে উক্ত অর্থ গ্রহণ করিতে ব্যর্থ হন, তাহা হইলে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ সরকারী কোষাগারে রাজস্ব জমা খাতে উক্ত অর্থ জমা করিবেন এবং’ঙ’ ফরমে উক্ত জমা সম্পর্কে মনিবকে অবগত করিবেন।
(৪) ১৬ ধারার (১) উপধারার (ক) দফার অধীনে বিভাজন বা অর্পণের উদ্দেশ্যে কোনো জমির যথার্থ ফসল (ফসলের পরিমাণ) নিরূপণ করিবার জন্য মনিব ও বর্গাদারকে পূর্ববিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের উক্ত জমির একটি অংশে শস্য কাটার নিরীক্ষা অনুষ্ঠানের ক্ষমতা থাকিবে।
তৃতীয় অধ্যায়
ক্ষতিপূরণের হার
বিধি ৫।
৪ ধারার (৪) উপধারার অধীনে অতিরিক্ত জমির জন্য ক্ষতিপূরণের হার নিম্নরূপভাবে নিরূপিত হইবে :
(ক) যেইক্ষেত্রে সরকারের নিহিত জমির মোট পরিমাণ ৫০ মানানসই বিঘার অধিক নহে,সেইক্ষেত্রে উক্ত জমির বাজার মূল্যের শতকরা বিশ ভাগ হারে;
(খ) যেইক্ষেত্রে সরকারের নিহিত জমির মোট পরিমাণ ৫০ মানানসই বিঘার অধিক, সেইক্ষেত্রে প্রথম ৫০ মানানসই বিঘার জন্য উক্ত জমির বাজার মূল্যের শতকরা বিশ ভাগ হারে এবং অবশিষ্টাংশের জন্য উক্ত জমির বাজার মূল্যের শতকরা দশ ভাগ হারে।
তবে শর্ত থাকে যে, সরকার নিহিত হইয়ার যোগ্য জমি বাছাই করিবার ইচ্ছাধিকার পরিবারের থাকিবে।
ওয়াক্‌ফ (সম্পত্তি হস্তান্তর ও উন্নয়নবিশেষ বিধান আইন২০১৩
সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন১। (১) এই আইন ওয়াক্‌ফ (সম্পত্তি হস্তান্তর ও উন্নয়ন) বিশেষ বিধান আইন, ২০১৩ নামে অভিহিত হইবে।
(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
আইনের প্রাধান্য৩। আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইন, বিধি, প্রবিধান, ওয়াক্‌ফ দলিল বা চুক্তিপত্রে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের বিধানাবলী প্রাধান্য পাইবে।
হস্তান্তর পদ্ধতি৪। (১) এই আইনের অধীন নিম্নরূপ পদ্ধতিতে সম্পত্তি হস্তান্তর করা যাইবে, যথাঃ –
(ক) বিক্রয়ের মাধ্যমে; (খ) দানের মাধ্যমে; (গ) বন্ধকের মাধ্যমে;  (ঘ) বিনিময়ের মাধ্যমে ;
(ঙ) ইজারা প্রদানের মাধ্যমে; এবং (চ) অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে উন্নয়নের জন্য হস্তান্তরের মাধ্যমে।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন ওয়াক্‌ফ সম্পত্তি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে সম্পত্তি হস্তান্তর আইন, ১৮৮২ এর বিধানাবলী প্রযোজ্য হইবে।
সম্পত্তি হস্তান্তরে সাধারণ সীমাবদ্ধতা৫। (১) ওয়াক্‌ফ সম্পত্তি কেবল সংশ্লিষ্ট ওয়াক্‌ফ কিংবা উক্ত ওয়াক্‌ফের স্বত্ত্বভোগীদের (beneficiary) প্রয়োজনে, কল্যাণে ও স্বার্থে হস্তান্তর করা যাইবে; এবং অনুরূপ হস্তান্তর ওয়াক্‌ফের উদ্দেশ্যের সহিত সংগতিপূর্ণ হইতে হইবে।
(২) অধ্যাদেশ এর ধারা ২(৯) মতে ওয়াক্‌ফে আগন্তক (stranger) এমন কোনো ব্যক্তির আবেদনের প্রেক্ষিতে এবং তাহার স্বার্থে বা প্রয়োজনে ওয়াক্‌ফ সম্পত্তি হস্তান্তর করা যাইবে না। (৩) ওয়াক্‌ফ কিংবা উহার স্বত্ত্বভোগীদের (beneficiary) প্রয়োজন, কল্যাণ ও স্বার্থে অনিবার্যভাবে আবশ্যক বিবেচিত না হইলে, কোনো ওয়াক্‌ফ সম্পত্তি বিক্রয় বা চিরস্থায়ী ইজারামূলে হস্তান্তর করা যাইবে না। (৪) এই আইনের অধীন হস্তান্তরের জন্য বিবেচ্য কোন ওয়াক্‌ফ সম্পত্তি, যদি ওয়াকিফ তাহার ওয়ারিশগণ, পরিবারের সদস্যগণ বা নির্ধারিত ব্যক্তিগণের উপকারার্থে করিয়া থাকেন, তাহা হইলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিগণের সংখ্যাগরিষ্ঠের লিখিত সম্মতি ব্যতিরেকে উক্ত সম্পত্তি হস্তান্তর করা যাইবে না।
হস্তান্তরলব্ধ অর্থ ব্যবহারে সীমাবদ্ধতা৬। ওয়াক্‌ফ সম্পত্তি সংশ্লিষ্ট ওয়াক্‌ফ এর যেরূপ প্রয়োজনে, কল্যাণে ও স্বার্থে হস্তান্তর করা হইবে, হস্তান্তরলব্ধ অর্থ কেবল অনুরূপ প্রয়োজনে, কল্যাণে ও স্বার্থে ব্যবহার করিতে হইবে।
মোতাওয়াল্লী বা ওয়াক্‌ফ প্রশাসক কর্তৃক হস্তান্তর৭। (১) অধ্যাদেশের ধারা ৩৪ এর অধীন ওয়াক্‌ফ প্রশাসক নিজ নিয়ন্ত্রণে গ্রহণ করিয়াছেন এইরূপ ওয়াক্‌ফ সম্পত্তি ব্যতিরেকে অন্য সকল ওয়াক্‌ফ সম্পত্তি কেবল সংশ্লিষ্ট মোতাওয়াল্লীর লিখিত আবেদনের ভিত্তিতে, ওয়াক্‌ফের প্রয়োজন, কল্যাণ ও স্বার্থে এবং ওয়াক্‌ফের উদ্দেশ্যের সহিত সংগতিপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, ধারা ৪ এ বর্ণিত পদ্ধতিতে হস্তান্তর করা যাইবে। (২) অধ্যাদেশের ধারা ৩৪ এর অধীন ওয়াক্‌ফ প্রশাসক নিজ নিয়ন্ত্রণে গ্রহণ করিয়াছেন এইরূপ ওয়াক্‌ফ সম্পত্তি, ওয়াক্‌ফ প্রশাসকের লিখিত আবেদনের ভিত্তিতে, ওয়াক্‌ফের প্রয়োজন, কল্যাণ ও স্বার্থে এবং ওয়াক্‌ফের উদ্দেশ্যের সহিত সংগতিপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, ধারা ৪ এ বর্ণিত পদ্ধতিতে হস্তান্তর করা যাইবে।
(৩) উপ-ধারা (১) ও (২) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, মোতাওয়াল্লী বা ওয়াক্‌ফ প্রশাসক, বিশেষ কমিটির সুপারিশ এবং সরকারের অনুমোদন ব্যতিরেকে কোন ওয়াক্‌ফ সম্পত্তি বিক্রয়, দান বিনিময়, বন্ধক বা ০৫(পাঁচ) বছরের অধিক মেয়াদের জন্য ইজারা এবং অংশিদারিত্বের ভিত্তিতে উন্নয়নের জন্য হস্তান্তর করিতে পারিবেন না, উক্তরূপ সুপারিশ ও অনুমোদন ব্যতিরেকে হস্তান্তর করা হইলে অনুরূপ হস্তান্তর অবৈধ ও অকার্যকর হইবে।
(৪) এই ধারার অধীন ওয়াক্‌ফ সম্পত্তি হস্তান্তরের লক্ষ্যে বিশেষ কমিটির সুপারিশ যুক্তিসংগত ও প্রয়োজনীয় বিবেচনা করিলেই কেবল সরকার অনুমোদন প্রদান করিবে।
(৫) এই ধারার অধীন ৫(পাঁচ) বছরের কম মেয়াদের জন্য ইজারামূলে হস্তান্তরিত সম্পত্তিতে কোনরূপ স্থায়ী কাঠামো নির্মাণ করা যাইবে না।
হস্তান্তরের উদ্দেশ্যে বিশেষ কমিটি৮। (১) এই আইনের অধীন ওয়াক্‌ফ সম্পত্তি হস্তান্তরের বিষয়ে সুপারিশ প্রদানের লক্ষ্যে নিম্নবর্ণিত সদস্য সমন্বয়ে বিশেষ কমিটি গঠিত হইবে, যথাঃ-
(ক) ওয়াক্‌ফ প্রশাসক, যিনি পদাধিকারবলে উহার সভাপতিও হইবেন;
(খ) সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলীয়া, ঢাকা এর অধ্যক্ষ বা তাহার মনোনীত উক্ত মাদ্রাসার একজন অধ্যাপক;
(গ) গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী কর্তৃক মনোনীত উক্ত অধিদপ্তরের একজন তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বা নির্বাহী প্রকৌশলী; (ঘ) মহাপরিদর্শক নিবন্ধন কিংবা তৎকর্তৃক মনোনীত একজন প্রতিনিধি;
(ঙ) ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত অনূর্ধ্ব উপ-সচিব পদমর্যাদার দুইজন কর্মকর্তা;
(চ) আইন ও বিচার বিভাগ কর্তৃক মনোনীত উপ-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;
(ছ) সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত উপ-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;
(জ) ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনোনীত উপ-সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা;
(ঝ) ইসলামী ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক কর্তৃক মনোনীত উক্ত ফাউন্ডেশনের একজন মুফতি;
(ঞ) উপ-ধারা (২) অনুসারে নির্বাচিত ০৩(তিন) জন মোতাওয়াল্লী;
(ট) বাংলাদেশ মোতাওয়াল্লী সমিতির (যদি জাতীয়ভাবে স্বীকৃত অনুরূপ কোন সমিতি থাকে) সভাপতি বা তাহার মনোনীত উক্ত সমিতির একজন প্রতিনিধি, অথবা মোতাওয়াল্লী সমিতি না থাকিলে ওয়াক্‌ফ প্রশাসক কর্তৃক মনোনীত কোনো ওয়াক্‌ফ এর একজন মোতাওয়াল্লী; (ঠ) ওয়াক্‌ফ প্রশাসক কর্তৃক মনোনীত তাহার কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা, যিনি কমিটির সদস্য- সচিব হিসাবেও দায়িত্ব পালন করিবেন।
(২) ওয়াক্‌ফ প্রশাসনকে জাতীয়ভাবে পর পর সর্বশেষ তিন বছর গড়ে সর্বোচ্চ চাঁদা প্রদানকারী ২০ (বিশ) টি ওয়াক্‌ফের মোতাওয়াল্লীগণ যৌথভাবে তাঁহাদের পছন্দনীয় ০৩(তিন) জন মোতাওয়াল্লীকে বিশেষ কমিটির সদস্য হিসাবে নির্বাচন করিবেন। (৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন গঠিত বিশেষ কমিটির মেয়াদ হইবে গঠিত হইবার তারিখ হইতে ৩(তিন) বছর, তবে নতুন কমিটি পুনর্গঠিত না হওয়া পর্যন্ত বিদ্যমান বিশেষ কমিটি দায়িত্ব পালন করিয়া যাইবে।(৪) বিশেষ কমিটির কোন সদস্য, উপযুক্ত কারণ ব্যতিরেকে, কমিটির পর পর তিনটি সভায় অনুপস্থিত থাকিলে, তাহার সদস্য পদ শূন্য হইবে। (৫) বিশেষ কমিটির মেয়াদকালে কমিটির কোনো সদস্য পদ সাময়িক বা স্থায়ীভাবে শূন্য হইলে, উক্ত শূন্য পদ সাময়িক বা, ক্ষেত্রমত, অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য স্থায়ীভাবে পূরণ করা যাইবে।
বিশেষ কমিটির কার্যাবলী ও ক্ষমতা৯। (১) কোনো ওয়াক্‌ফ সম্পত্তির বিক্রয়, দান, বন্ধক বিনিময়, ৫ (পাঁচ) বছরের অধিক মেয়াদের জন্য ইজারা প্রদান এবং অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে উন্নয়নের জন্য হস্তান্তর করিবার ক্ষেত্রে বিশেষ কমিটি এই আইন ও তদ্‌ধীন প্রণীত বিধি-বিধানের আলোকে সুপারিশ করিবে।  (২) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রদত্ত যে কোন সুপারিশ মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুমোদিত হইতে হইবে।  (৩) বিশেষ কমিটির কোন সদস্য, ওয়াক্‌ফ প্রশাসক ব্যতীত, নিজেই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সম্পত্তি হস্তান্তরের জন্য আবেদনকারী হইয়া থাকিলে, তিনি বিশেষ কমিটির সংশ্লিষ্ট সভায় অংশগ্রহণ পারিবেন না।
বিশেষ কমিটির সভা১০। (১) অন্যূন ৯ (নয়) জন সদস্যের উপস্থিতিতে বিশেষ কমিটির সভার কোরাম হইবে।
(২) কমিটির সভায় উপস্থিত সদস্যদের সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে; এবং মতামতের সমতার ক্ষেত্রে সভাপতির দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট প্রদানের ক্ষমতা থাকিবে।
দানের মাধ্যমে হস্তান্তর১১। (১) ধারা ৫ এ ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন ওয়াক্‌ফ সম্পত্তি অন্য কোন ওয়াক্‌ফ এস্টেট বা, মুনাফার ভিত্তিতে পরিচালিত নয়, এমন কোন ধর্মীয়, শিক্ষা বা জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠানকে দান করা যাইবে।
(২) এই ধারার অধীন দান এর প্রস্তাব কমিটি কর্তৃক সুপারিশকৃত ও মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুমোদিত হইতে হইবে।
(৩) কোন বিশেষ উদ্দেশ্যে এই ধারার অধীন কোন সম্পত্তি দান এর মাধ্যমে প্রদত্ত ও গৃহীত হইয়া থাকিলে উক্ত উদ্দেশ্য বহির্ভূত অন্য কোন উদ্দেশ্যে উক্ত সম্পত্তি ব্যবহার করা যাইবে না।
(৪) উপ-ধারা (৩) এর বিধান লঙ্ঘন করিয়া কোন সম্পত্তি নির্ধারিত উদ্দেশ্য বহির্ভূত অন্য কোন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হইলে, বা ব্যবহারের উদ্যোগ গ্রহণ করা হইলে, ওয়াক্‌ফ প্রশাসক অধ্যাদেশ এর ধারা ৩৪ এর অধীন উক্ত সম্পত্তি নিজ নিয়ন্ত্রণে গ্রহণ করিতে পারিবেন।
অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে উন্নয়নের জন্য হস্তান্তর১২। (১) কোন ওয়াক্‌ফ সম্পত্তি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে উন্নয়নের জন্য হস্তান্তর করা যাইবে।
(২) এই আইনের অধীন ওয়াক্‌ফ সম্পত্তির হস্তান্তর বিশেষ কমিটির সুপারিশ ও সরকারের অনুমোদনের ভিত্তিতে করিতে হইবে। (৩) এই আইনের অধীন ওয়াক্‌ফ সম্পত্তির উন্নয়নের ক্ষেত্রে রিয়েল এষ্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ এর ধারা ১০ এর বিধান অনুযায়ী ভূমি-মালিক ও ডেভেলপার এর মধ্যে চুক্তি সম্পাদন করিতে হইবে; এবং এতদুদ্দেশ্যে ওয়াক্‌ফ সম্পত্তির ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত মোতাওয়াল্লী বা, ক্ষেত্রমত, ওয়াক্‌ফ প্রশাসক ভূমি-মালিক হিসাবে গণ্য হইবেন। (৪) একজন ভূমি-মালিক নিজ ভূমির ক্ষেত্রে নিজ স্বার্থ রক্ষা করিয়া যেরূপ শর্তে ডেভেলপারের সহিত চুক্তি করেন, এই ধারার অধীন ওয়াক্‌ফ সম্পত্তি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে উন্নয়নের জন্য হস্তান্তর করিবার ক্ষেত্রে মোতাওয়াল্লী বা, ক্ষেত্রমত, ওয়াক্‌ফ প্রশাসক সেরূপ শর্তে ওয়াক্‌ফ সম্পত্তি বা উহার স্বত্বভোগীদের (beneficiary) স্বার্থ রক্ষা করিয়া ডেভেলপারের সহিত চুক্তি সম্পাদন করিবেন। (৫) এই ধারার অধীন ওয়াক্‌ফ সম্পত্তি হস্তান্তর করিবার ক্ষেত্রে উন্নয়ন কার্যক্রমের সকল পর্যায়ে ওয়াক্‌ফ প্রশাসকের তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ থাকিবে এবং চুক্তিতে তাহা উল্লিখিত থাকিবে এবং সংশ্লিষ্ট চুক্তির শর্ত অনুযায়ী সম্পত্তির উন্নয়ন হইতেছে কিনা এবং ওয়াক্‌ফ সম্পত্তি বা উহার স্বত্বভোগীদের (beneficiary) প্রয়োজন, কল্যাণ ও স্বার্থ যথাযথভাবে সংরক্ষিত হইতেছে কিনা ওয়াক্‌ফ প্রশাসক তাহা নিশ্চিত হইবেন । (৬) এই ধারার অধীন রিয়েল এস্টেট ডেভেলপারের মাধ্যমে ওয়াক্‌ফ সম্পত্তির উন্নয়নের ক্ষেত্রে রিয়েল এষ্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ এর অন্যান্য বিধানাবলী, যতদূর সম্ভব, প্রযোজ্য হইবে।
(৭) এই ধারার অধীন অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে উন্নয়নের জন্য হস্তান্তর কেবল তফসিলে বর্ণিত কোন এলাকায় অবস্থিত ওয়াক্‌ফ সম্পত্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে।
হস্তান্তরের ক্ষেত্রে দরপত্র আহবানের বাধ্যবাধকতা১৩। (১) কোন ওয়াক্‌ফ সম্পত্তির বিক্রয় বা ৫(পাঁচ) বছরের অধীক মেয়াদের জন্য ইজারা প্রদান বা অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে উন্নয়নের জন্য হস্তান্তর করিবার ক্ষেত্রে উন্মুক্ত দরপত্র আহবান করিতে হইবে। (২) কোন ওয়াক্‌ফ সম্পত্তির বিক্রয় বা ৫(পাঁচ) বছরের অধীক মেয়াদের জন্য ইজারা প্রদানের প্রস্তাব সরকার কর্তৃক অনুমোদিত হইবার পর, হস্তান্তরের জন্য নির্ধারিত উক্ত সম্পত্তির স্থানীয় মূল্য, সরকার নির্ধারিত প্রচলিত বাজার দর অনুযায়ী ১০(দশ) লক্ষ টাকার অধিক হইলে, জাতীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র আহবানের মাধ্যমে উক্ত বিক্রয় বা ইজারা সম্পাদন করিতে হইবে, অন্যথায় স্থানীয়ভাবে দরপত্র আহবান বা উন্মুক্ত নিলাম অনুষ্ঠানের মাধ্যমে হস্তান্তর সম্পাদন করা যাইবে।
(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে উন্নয়নের জন্য ওয়াক্‌ফ সম্পত্তি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ এর ধারা ৫ এর অধীন নিবন্ধিত রিয়েল এষ্টেট ডেভেলপারের মধ্য হইতে অন্যূন ১০ (দশ) এবং অনূর্ধ ১৫ (পনের) টি প্রাক-উপযুক্ত (prequalified) ডেভেলপারের একটি প্যানেল নির্বাচন করিয়া নির্ধারিত সময়ের জন্য সংরক্ষণ করিতে হইবে।  (৪) এই ধারার অধীন কোন দরপত্র বা নিলামে উদ্ধৃত বা প্রস্তাবিত দর যোগসাজসী বা অস্বাভাবিকভাবে কম প্রতীয়মান হইলে ওয়াক্‌ফ প্রশাসক, বা ক্ষেত্রমত, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, ওয়াক্‌ফের স্বার্থে, উক্ত নিলাম বা দরপত্র বাতিল করিতে পারিবে।
উন্নয়নের জন্য অর্থায়নের পদ্ধতি১৪। ওয়াক্‌ফ সম্পত্তি উন্নয়নের লক্ষ্যে নিম্নবর্ণিত পদ্ধতিতে অর্থায়ন করা যাইবে, যথাঃ –
(ক) ওয়াক্‌ফ প্রশাসনের নিজস্ব তহবিলের অর্থ বিনিয়োগ দ্বারা; (খ) ওয়াক্‌ফের নিজস্ব তহবিলের অর্থ বিনিয়োগের মাধ্যমে; (গ) সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অনুদানের মাধ্যমে; (ঘ) ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিকট হইতে ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে; (ঙ) দোকানদার বা ভাড়াটিয়াদের নিকট হইতে জামানত বা সালামীর অর্থ অথবা অগ্রিম ভাড়ার টাকা গ্রহণের মাধ্যমে; (চ) দোকানঘর, আবাসিক ফ্ল্যাট বা বাণিজ্যিক স্পেস এর পজেশন বিক্রয়ের মাধ্যমে;
(ছ) ডেভেলপারের অর্থ বিনিয়োগের মাধ্যমে; এবং (জ) কোন বিদেশী রাষ্ট্র বা সংস্থার অর্থ, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, বিনিয়োগের মাধ্যমে।
স্বীয় উদ্যোগে ওয়াক্‌ফ সম্পত্তির উন্নয়ন১৫। কোন ওয়াক্‌ফ সম্পত্তি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে উন্নয়নের জন্য কোন রিয়েল এস্টট ডেভেলপার এ সাথে কোন চুক্তি না করিয়া, উহার নিজস্ব অর্থে বা অনুমোদিত কোন উৎস হইতে সংগৃহীত পুঁজি বা গৃহীত ঋণ লগ্নি করিয়া এবং ওয়াক্‌ফ সম্পত্তির মালিকানা অক্ষুন্ন রাখিয়া উক্ত ওয়াক্‌ফ সম্পত্তি বা উহার অংশ উন্নয়ন করিলে এই আইনের কোন বিধান প্রযোজ্য হইবে না।
ওয়াক্‌ফ প্রশাসকের সার্বিক নিয়ন্ত্রণ১৬। (১) ওয়াক্‌ফ সম্পত্তির হস্তান্তর সংশ্লিষ্ট ওয়াক্‌ফের বা উহার স্বত্বভোগীদের (beneficiary) প্রয়োজনে, কল্যাণে ও স্বার্থে এবং সংশ্লিষ্ট ওয়াক্‌ফের উদ্দেশ্যের সহিত সংগতিপূর্ণ কিনা, এবং বিশেষ করিয়া কোন ওয়াক্‌ফ সম্পত্তি বন্ধক রাখিয়া কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান হইতে গৃহীত ঋণ সঠিকভাবে ব্যবহৃত হইতেছে কিনা ওয়াক্‌ফ প্রশাসক তাহা কঠোরভাবে পরিবীক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ করিবেন। (২) কোন ওয়াক্‌ফ সম্পত্তি বন্ধক রাখিয়া ঋণ গ্রহণ করিবার ক্ষেত্রে বিশেষ কমিটি বন্ধক প্রস্তাব সুপারিশ করিবার পূর্বে কঠোরভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও পর্যালোচনা করিয়া নিশ্চিত হইবে যে, গৃহিতব্য ঋণ সিডিউল অনুযায়ী পরিশোধ করা সম্ভব হইবে।
অপরাধ১৭। (১) এই আইনের অধীন দায়িত্ব পালন করিবার ক্ষেত্রে-
(ক) বিশেষ কমিটির কোন সদস্য ইচ্ছাকৃতভাবে নিজে অবৈধভাবে লাভবান হইবার বা অন্য কাহাকেও অবৈধভাবে লাভবান করাইবার উদ্দেশ্যে কোন ওয়াক্‌ফ সম্পত্তি বা উহার স্বত্ত্বভোগীদের (beneficiary) স্বার্থের পরিপন্থী কার্য করিয়া থাকিলে, বা  (খ) কোন ওয়াক্‌ফ সম্পত্তির ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত মোতাওয়াল্লী, রিসিভার বা সরকারী কর্মকর্তা এই আইনের অধীন বিশেষ কমিটির সুপারিশ ও সরকারের অনুমোদন গ্রহণ ব্যতিরেকে কোন ওয়াক্‌ফ সম্পত্তি হস্তান্তর করিলে, বা (গ) কোন ওয়াক্‌ফ সম্পত্তির ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত কোন ব্যক্তি ওয়াক্‌ফ সম্পত্তির হস্তান্তরলব্ধ অর্থ ওয়াক্‌ফ সম্পত্তি বা উহার স্বত্ত্বভোগীদের (beneficiary) যেরূপ প্রয়োজনে, কল্যাণে ও স্বার্থে সম্পাদন করা হইয়াছে, অনুরূপ প্রয়োজনে, কল্যাণে ও স্বার্থে ব্যবহার না করিয়া ধারা ৬ এর বিধান লঙ্ঘন করিয়া অন্য কোন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করিলে,
তিনি এই আইনের অধীন অপরাধ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন।  (২) কোন ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত অপরাধ করিলে তিনি অনুর্ধ্ব ৩ (তিন) বৎসর পর্যন্ত কারাদন্ড বা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবেন।
তদন্ত ও বিচার পদ্ধতি১৮। এই আইনের অধীন তদন্ত, বিচার ও আপীল ফৌজদারী কার্যবিধিতে বর্ণিত পদ্ধতি অনুযায়ী হইবে।
অপরাধের অআমলযোগ্যতা ও জামিনযোগ্যতা১৯। ফৌজদারী কার্যবিধিতে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন অপরাধসমূহ অ-আমলযোগ্য (non-cognizable) এবং জামিনযোগ্য (bailable) হইবে।
অপরাধ বিচারার্থ গ্রহণ ও বিচার২০। (১) ওয়াক্‌ফ প্রশাসক কিংবা তাহার নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তার লিখিত অভিযোগ ব্যতিরেকে কোন আদালত এই আইনের অধীন কোন অপরাধ বিচারার্থ আমলে গ্রহণ করিবে না। (২) সরকারের পূর্বানুমোদন ব্যতিরেকে ওয়াক্‌ফ প্রশাসক এর বিরুদ্ধে কোন আদালত এই আইনের অধীন কোন অপরাধ বিচারার্থ আমলে গ্রহণ করিবে না।
বার্ষিক প্রতিবেদন২১। (১) ওয়াক্‌ফ প্রশাসক, প্রতি ইংরেজী বৎসরে এই আইনের অধীন ওয়াক্‌ফ সম্পত্তির হস্তান্তরের একটি পরিপূর্ণ প্রতিবেদন পরবর্তী ইংরেজী বৎসরের ৩১ মার্চ তারিখের মধ্যে সরকারের নিকট প্রেরণ করিবেন। (২) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রতিবেদনে, অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে, হস্তান্তরিত সম্পত্তির বিবরণ ও পরিমাণ, হস্তান্তর মূল্য, হস্তান্তরের উদ্দেশ্য, হস্তান্তরের তারিখ, হস্তান্তরের সুপারিশ ও অনুমোদনের তারিখ, ইত্যাদি উল্লেখ থাকিবে।
অস্পষ্টতা দূরীকরণ২২। এই আইনের কোন বিধান কার্যকর করিবার ক্ষেত্রে কোন অস্পষ্টতা দেখা দিলে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের বিধানাবলীর সহিত সঙ্গতিপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, উক্তরূপ অস্পষ্টতা দূর করিতে পারিবে।
বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা২৩। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।
প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা২৪। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে ওয়াক্‌ফ প্রশাসক, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইন বা তদ্‌ধীন প্রণীত কোন বিধির সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়া সাপেক্ষে, প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবেন।
তফসিল সংশোধনের ক্ষমতা২৫। সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, তফসিল সংশোধন করিতে পারিবে।
আইনের ইংরেজি পাঠ২৬। (১) এই আইন কার্যকর হইবার পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের বাংলা পাঠের ইংরেজিতে অনুদিত একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ (Authentic English Text) প্রকাশ করিবে।  (২) বাংলা পাঠ ও ইংরেজি পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রাধান্য পাইবে

রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০
( ২০১০ সনের ৪৮ নং আইন )
[অক্টোবর ৫, ২০১০]
প্রথম অধ্যায়
সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন১। (১) এই আইন রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ নামে অভিহিত হইবে।
(২) এই আইনের –
(ক) ধারা ১৯, ২০, ২১, ২২, ২৩, ২৪, ২৫, ২৬, ২৭, ২৮, ২৯, ৩০, ৩১, ও ৩২ অবিলম্বে কার্যকর হইবে;
(খ) দফা (ক) তে উল্লিখিত ধারাগুলি ব্যতীত অন্যান্য ধারাগুলি ৭ ডিসেম্বর, ২০০৮ খ্রিস্টাব্দ তারিখ হইতে কার্যকর হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।
প্রযোজ্যতা৩। (১) সম্পূর্ণভাবে সরকারী ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমের ক্ষেত্রে এই আইনের বিধানাবলী প্রযোজ্য হইবে না।
(২) সরকারের কোন মন্ত্রণালয় বা বিভাগ অথবা উহার অধীনস্থ বা সংযুক্ত কোন দপ্তর বা সংস্থা বা কর্তৃপক্ষ অথবা কোন সংবিধিবদ্ধ কর্তৃপক্ষ বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান কোন ডেভেলপার এর সহিত যৌথভাবে রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম পরিচালনা করিলে উহা সরকারী-বেসরকারী যৌথ উদ্যোগে রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা হিসাবে গণ্য হইবে এবং সেইক্ষেত্রে এই আইন এবং তদধীন প্রণীত বিধিমালা প্রযোজ্য হইবে।
দ্বিতীয় অধ্যায়: কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা, রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার নিবন্ধন, দায়িত্ব, ইত্যাদি
কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা৪। (১) সরকার, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে এক বা একাধিক কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করিতে পারিবে এবং তদুদ্দেশ্যে সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা যে কোন সরকারী বা সংবিধিবদ্ধ বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানকে প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত এলাকার জন্য কর্তৃপক্ষ হিসাবে ঘোষণা করিতে পারিবে। (২) বিশেষ করিয়া এবং উপ-ধারা (১) এর সামগ্রিকতাকে ক্ষুন্ন না করিয়া,- (ক) সংশ্লিষ্ট নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এবং নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অবর্তমানে সংশ্লিষ্ট সিটি কর্পোরেশন, উহার স্থানীয় অধিক্ষেত্রের জন্য; (খ) সংশ্লিষ্ট পৌরসভা, উহার স্থানীয় অধিক্ষেত্রের জন্য; (গ) সংশ্লিষ্ট ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড, উহার স্থানীয় অধিক্ষেত্রের জন্য; এবং (ঘ) নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, পৌরসভা এবং ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড বহির্ভূত এলাকার জন্য জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ- এই আইনের অধীন কর্তৃপক্ষ হিসাবে গণ্য হইবে।
রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার নিবন্ধন৫। (১) এই আইনের বিধান অনুযায়ী কোন একটি নির্দিষ্ট এলাকায় রিয়েল এস্টেট ব্যবসা পরিচালনার উদ্দেশ্যে প্রত্যেক রিয়েল এস্টেট ডেভেলপারকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে নিবন্ধন গ্রহণ করিতে হইবে। (২) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, সমগ্র বাংলাদেশে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা রিচালনা করিতে হইলে উক্ত রিয়েল এস্টেট ডেভেলপারকে সরকারের নিকট হইতে নিবন্ধন গ্রহণ করিতে হইবে। (৩) প্রত্যেক রিয়েল এস্টেট ডেভেলপারকে নিম্নবর্ণিত কাগজপত্রের কপিসহ নিবন্ধনের জন্য বিধি দ্বারা নির্ধারিত ফরমে সরকার বা, ক্ষেত্রমত, কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করিতে হইবে, যথা (ক) ট্রেড লাইসেন্স; (খ) ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর(টিআইএন) সার্টিফিকেট; (গ) মূল্য সংযোজন কর(VAT)রেজিস্ট্রেশন নম্বর;  (ঘ)(i)প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের অভিজ্ঞতা (যদি থাকে); (ii)কারিগরী ব্যক্তিদের যোগ্যতার প্রমাণপত্র (স্থপতি, প্রকৌশলী ও পরিকল্পনাবিদের শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ এবং সংশ্লিষ্ট পেশাজীবী প্রতিষ্ঠানের সদস্য পত্রের সনদ); (ঙ) কোম্পানী হইলে, মেমোরেন্ডাম অব এসোসিয়েশন(Memorandum of Association) এবং আর্টিকেলস্‌ অব এসোসিয়েশন (Articles of Association)সহ সার্টিফিকেট অব ইনকর্পোরেশন(Certificate of Incorporation);(চ) রিয়েল এস্টেট এন্ড হাউজিং এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) অথবা ল্যান্ড ডেভেলপার্স এসোসিয়েশন এর সদস্য পদের নিবন্ধনের কপি, যদি থাকে। (৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন আবেদন প্রাপ্তির পর সরকার বা, ক্ষেত্রমত, কর্তৃপক্ষ প্রাপ্ত তথ্যাদি ৬০ (ষাট) দিনের মধ্যে যাচাই-বাছাই পূর্বক যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে- (ক) আবেদনকারী রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য নির্ধারিত শর্তাবলী পূরণ করিতে সক্ষম, তাহা হইলে উক্ত সময়ের মধ্যে আবেদনটি মঞ্জুর করিবে এবং তদ্‌সম্পর্কে আবেদনকারীকে লিখিতভাবে অবহিত করিবে; অথবা (খ) আবেদনকারী উক্ত শর্তাবলী পূরণ করিতে অক্ষম, তাহা হইলে কারণ উল্লেখ করিয়া আবেদন নামঞ্জুর করিবে এবং তদ্‌সম্পর্কে আবেদনকারীকে লিখিতভাবে অবহিত করিবে।
(৫) উপ-ধারা ৪ (ক) এর অধীন আবেদন মঞ্জুর করা হইলে সরকার বা, ক্ষেত্রমত, কর্তৃপক্ষ আবেদনকারীকে লিখিতভাবে অবহিত করিবার তারিখ হইতে পরবর্তী ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে, প্রযোজ্য ফিস আদায় সাপেক্ষে, ৫ (পাঁচ) বৎসরের জন্য আবেদনকারীর বরাবরে একটি নিবন্ধন সনদ ইস্যু করিবে এবং উক্ত নিবন্ধন সনদ ৫(পাঁচ) বৎসর অন্তর অন্তর নবায়ন করা যাইবে। (৬) নিবন্ধিত ডেভেলপারদের একটি তালিকা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত পদ্ধতিতে সংরক্ষণ ও প্রকাশ করিবে। (৭) নির্ধারিত পদ্ধতিতে ডেভেলপারের নিবন্ধন নবায়ন, বাতিল ও সংশোধন করা যাইবে।


ডেভেলপারের দায়-দায়িত্ব
৬। (১) এই আইনের অধীন সকল ডেভেলপারকে তদকর্তৃক প্রস্তুতকৃত প্রসপেক্টাসে রিয়েল এস্টেট এর নিবন্ধন নম্বরসহ উহার নাম, ঠিকানা ও যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত নক্‌শার অনুমোদন নম্বরসহ স্মারক নম্বর ও তারিখ উল্লেখ করিতে হইবে। (২) কোন ডেভেলপার কর্তৃপক্ষ কতৃর্ক রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন এবং ডেভেলপার কর্তৃক হস্তান্তর দলিল সম্পাদনের ক্ষমতা বা অধিকার প্রাপ্তির পূর্বে রিয়েল এস্টেট ক্রয়বিক্রয়ের জন্য প্রকল্পের বিজ্ঞপ্তি গণমাধ্যমে প্রচার করিতে পারিবে না। (৩) প্রকল্প অনুমোদনের পূর্বে ক্রেতার নিকট ডেভেলপার কোন রিয়েল এস্টেট বিক্রয় করিতে বা বিক্রয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ হইতে পারিবে না। (৪) প্রত্যেক ডেভেলপার ক্রেতাকে কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ও সংশ্লিষ্ট জমির মালিকানা সংক্রান্ত দলিলপত্র প্রদর্শন করিবে। (৫) অনুমোদিত নক্‌শা ব্যতীত অন্যান্য সহযোগী স্থাপত্য নক্‌শা, কাঠামোগত নকশাসহ(structural design)অন্যান্য বিল্ডিং সার্ভিসেস ডিজাইন ও দলিলাদি ডেভেলপার কর্তৃক প্রতিস্বাক্ষরিত হইতে হইবে। (৬) বেসরকারী বা সরকারী-বেসরকারী যৌথ উদ্যোগে আবাসিক প্লট প্রকল্পের আওতাধীন জমির মালিকানা স্বত্ব ও ক্ষতিগ্রস্থদের পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে বেসরকারী আবাসিক প্রকল্পের ভূমি উন্নয়ন বিধিমালা, ২০০৪, প্রয়োজনীয় সংশোধন সাপেক্ষে, অনুসরণ করিতে হইবে। (৭) প্রত্যেক ডেভেলপারকে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে বেসরকারী আবাসিক প্রকল্পেরভূমি উন্নয়ন বিধিমালা, ২০০৪, প্রয়োজনীয় সংশোধন সাপেক্ষে, এবং প্রযোজ্য ইমারত নির্মাণ সংক্রান্ত বিধিমালা অনুযায়ী রিয়েল এস্টেট এর নক্‌শার অনুমোদন, রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন প্রকল্প উন্নয়ন, সংশোধন, পুনঃঅনুমোদন বা নবায়ন করিতে হইবে। (৮) বেসরকারী বা সরকারী-বেসরকারী যৌথ উদ্যোগে নির্মিত রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন প্রকল্পের লে-আউট প্ল্যান নির্ধারিত পদ্ধতিতে যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত হইতে হইবে। (৯) রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন প্রকল্পের ক্ষেত্রে বেসরকারী আবাসিক প্রকল্পের ভূমি উন্নয়নবিধিমালা, ২০০৪ অনুযায়ী নাগরিক সুবিধাদি, যতদূর সম্ভব, নিশ্চিত করিতে হইবে। (১০) প্রত্যেক ডেভেলপারকে সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধি-বিধান অনুযায়ী রিয়েল এস্টেট উন্নয়নপ্রকল্প এইরূপে বাস্তবায়ন করিতে হইবে যাহাতে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট যে কোন প্রকারের অবকাঠামো বা প্লট বা ফ্ল্যাট বা রাস্তাঘাট, বৈদ্যুতিক সংযোগ, পানি সরবরাহ, পয়ঃ ও পানি নিষ্কাশন, গ্যাস সরবরাহ এবং টেলিফোন সংযোগ ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সুবিধার কোনরূপ ক্ষতি সাধন না হয়।
ভূমির মালিক কর্তৃক রিয়েল এস্টেট নির্মাণ৭। (১) কোন ডেভেলপার জমি খরিদ করিয়া উক্ত জমিতে মালিক নিয়ত হইয়া উক্ত জমির উপর বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে রিয়েল এস্টেট নির্মাণ করিলে এই আইনের সকল বিধি-বিধান তাহার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হইবে।  (২) কোন ব্যক্তি এককভাবে বা কয়েকজন ব্যক্তি যৌথভাবে কোন রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান না হইয়াও তাহার বা তাহাদের নিজস্ব ভূমির উপর ক্রয়-বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে রিয়েল এস্টেট নির্মাণ করিলে, তাহার বা তাহাদের ক্ষেত্রেও, যতদূর প্রযোজ্য হয়, এই আইনের বিধানাবলী প্রযোজ্য হইবে।

তৃতীয় অধ্যায়”: রিয়েল এস্টেট ক্রয়-বিক্রয়, রেজিস্ট্রেশন, হস্তান্তর, ইত্যাদি
রিয়েল এস্টেট ক্রয়-বিক্রয়ের শর্তাবলী৮। (১) প্রসপেক্টাসে বা বরাদ্দপত্রে রিয়েল এস্টেট এর বিক্রয়যোগ্য এলাকার বিভাজনসহ যথাযথ ব্যাখ্যা বা বিশ্লেষণ উল্লেখ করিতে হইবে।  (২) রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্ত বিস্তারিত শর্ত, পক্ষদের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তিতে উল্লেখ করিতে হইবে। (৩) কোন ডেভেলপার ক্রেতার সম্মতিক্রমে বরাদ্দকৃত নির্দিষ্ট প্লট বা ফ্ল্যাট পরিবর্তন করিতে পারিবে। (৪) কোন ডেভেলপার ক্রেতার নিকট হইতে চুক্তিতে উল্লিখিত শর্তের বাহিরে অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণ করিতে পারিবে নাঃ তবে শর্ত থাকে যে, যদি কোন পক্ষ পরবর্তীতে কোন উন্নতমানের সরঞ্জামাদি সংযোজনের প্রস্তাব করিয়া পরস্পর সম্মত হইয়া এই মর্মে সম্পূরক চুক্তি সম্পাদন করিলে এই বিধান কার্যকর হইবে না।
হস্তান্তর দলিল সম্পাদন ও রেজিস্ট্রেশন৯। (১) রিয়েল এস্টেটের সমুদয় মূল্য পরিশোধের পর ডেভেলপার অনূর্ধ্ব ৩ (তিন) মাসের মধ্যে ক্রেতাকে রিয়েল এস্টেটের দখল হস্তান্তর, দলিল সম্পাদন ও রেজিস্ট্রেশন কার্যাদি সম্পন্ন করিয়া দিবে। (২) রিয়েল এস্টেট এর দখল হস্তান্তরকালে উহার আয়তন কম বা বেশী হইলে তাহার মূল্য ক্রয়কৃত দর(rate)অনুযায়ী ৩ (তিন) মাসের মধ্যে সমন্বয় করিতে হইবে। (৩) কোন ডেভেলপার কোন ভূমির মালিকের নিকট হইতে বা পক্ষে আম-মোক্তারনামা দলিলবলে ভূমি প্রাপ্ত হইয়া উক্ত ভূমিতে রিয়েল এস্টেট নির্মাণ এবং তদীয় অংশে প্রাপ্ত রিয়েল এস্টেট ক্রেতাগণের নিকট বিক্রয়ের প্রস্তাব করিলে ভূমির মালিক বা তাহার পক্ষে আম-মোক্তারনামা দলিলে, উপ-ধারা (৪) এর বিধান সাপেক্ষে, এই মর্মে ডেভেলপারকে ক্ষমতা অর্পণ করিতে হইবে যাহাতে ডেভেলপার তাহার অংশে প্রাপ্ত রিয়েল এস্টেট বাবদ দলিল স্বয়ং সম্পাদন করিয়া বিক্রয় বা অন্য কোনভাবে হস্তান্তর করিতে পারে। (৪) উপ-ধারা (৩) এ বর্ণিত মতে ভূমির মালিক বা তাহার পক্ষে ডেভেলপারকে আম-মোক্তারনামা দলিলের মাধ্যমে দলিল সম্পাদন করিয়া রিয়েল এস্টেট বিক্রয় বা হস্তান্তরের ক্ষমতা অর্পণ করা না হইলে,নির্মিত রিয়েল এস্টেট বিক্রয় বা হস্তান্তরযোগ্য হইবার পর ডেভেলপার কর্তৃক লিখিতভাবে অনুরুদ্ধ হইবার ১৫ (পনের) দিনের মধ্যে ভূমির মালিক বা তাহার পক্ষে ক্রেতার অনুকূলে দলিল সম্পাদন করিয়া দিতে হইবে। (৫) প্রচলিত অন্য কোন আইনে ভিন্নতর যাহাই থাকুক না কেন, ডেভেলপার কর্তৃক উপ-ধারা (৪) এর অধীন অনুরুদ্ধ হইয়া নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভূমির মালিক বা তাহার পক্ষে দলিল সম্পাদন করা না হইলে, ডেভেলপার স্বয়ং এই ধারার ক্ষমতাবলে তদীয় অংশ এইরূপে ক্রেতার বরাবরে দলিল সম্পাদন করিয়া দিতে পারিবে যেন ডেভেলপার নিজেই উক্ত ভূমি ও রিয়েল এস্টেটের মালিক।
চতুর্থ অধ্যায় চুক্তি, ইত্যাদি
ভূমি মালিক ও ডেভেলপারের মধ্যে চুক্তি১০। (১) ভূমির মালিক রিয়েল এস্টেট উন্নয়নের লক্ষ্যে ডেভেলপারের সহিত লিখিত দ্বি-পাক্ষিক চুক্তি(Joint Venture Agreement)সম্পাদন করিবেন। (২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত চুক্তিতে রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন বাবদ ডেভেলপারের প্রাপ্ত অংশের পরিমাণ উল্লেখপূর্বক প্রাপ্ত অংশ ডেভেলপারের মনোনীত ক্রেতা বরাবর দলিল সম্পাদন ও রেজিস্ট্রেশন করিয়া দেওয়ার ক্ষমতা প্রদানের লক্ষ্যে ডেভেলপার বরাবর আম-মোক্তারনামা দলিল সম্পাদনের শর্ত উল্লেখসহ ভূমি উন্নয়ন বা নির্মাণ কাজ শুরু ও শেষ করিবার সময় উল্লেখ থাকিবে। (৩) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত চুক্তির শর্ত অনুযায়ী রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন বা নির্মাণ কাজ শুরু ও শেষ করিতে হইবে।
রিয়েল এস্টেট এর মূল্য পরিশোধের নিয়মাবলী১২। (১) প্রসপেক্টাস বা বরাদ্দপত্রে উল্লিখিত নিয়ম অনুযায়ী ক্রেতা রিয়েল এস্টেট এর মূল্য ব্যাংকের মাধ্যমে পরিশোধ করিবে। (২) অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ইত্যাদি সরবরাহপূর্বক বিক্রয় বা বরাদ্দকৃত রিয়েল এস্টেটসমূহ দখল হস্তান্তরের উপযোগী না হওয়া পর্যন্ত কিস্তির অর্থ ব্যতীত কোন সুদ নেওয়া যাইবে না।
ক্রেতা কর্তৃক এককালীন মূল্য বা কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থতা১৪। (১) ক্রেতা কতৃর্ক স্থিরীকৃত সময়ের মধ্যে রিয়েল এস্টেট এর এককালীন মূল্য বা কিস্তির মূল্য পরিশোধে ব্যর্থতার ফলাফল সম্পর্কে প্রসপেক্টাস বা বরাদ্দপত্রে বিশদ উল্লেখ থাকিতে হইবে। (২) চুক্তিতে বা বরাদ্দপত্রে ভিন্নতর যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন কারণে রিয়েল এস্টেট ক্রেতা এককালীন মূল্য বা কিস্তির অর্থ পরিশোধে ব্যর্থ হইলে ক্রেতাকে, রেজিস্টার্ড ডাকযোগে, অন্যূন ৬০(ষাট) দিনের পূর্ব নোটিশ প্রদান ব্যতীত তাহার রিয়েল এস্টেট এর বরাদ্দ বাতিল করা যাইবে না।
(৩) উপ-ধারা (২) এ বর্ণিত বরাদ্দ বাতিলের ক্ষেত্রে ক্রেতার জমাকৃত অর্থ বরাদ্দ বাতিল আদেশের পরবর্তী ৩ (তিন) মাসের মধ্যে প্রাপকের হিসাবে প্রদেয়(account payee)চেকের মাধ্যমে একত্রে ফেরত প্রদান করিতে হইবে।
(৪) উপ-ধারা (২) এ বর্ণিত বিধান অনুযায়ী কোন ক্রেতা বিলম্বে কিস্তির অর্থ পরিশোধ করিতে চাহিলে, দেয় কিস্তির উপর বিলম্বিত সময়ের জন্য কিস্তির অর্থের উপর ১০% হারে সুদ প্রদান সহকারে কিস্তি পরিশোধ করিতে পারিবে।
(৫) উপ-ধারা (৪) এ বর্ণিত বিধান অনুযায়ী ক্রেতা সর্বসাকুল্যে ৩ (তিন) বার কিস্তির অর্থ পরিশোধে বিলম্ব করিলে ডেভেলপার সংশ্লিষ্ট ক্রেতার বরাদ্দ বাতিল করিতে পারিবে।
ডেভেলপার কর্তৃক রিয়েল এস্টেট হস্তান্তরে ব্যর্থতা১৫। (১) চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ডেভেলপার রিয়েল এস্টেট হস্তান্তরে ব্যর্থ হইলে রিয়েল এস্টেট এর মূল্য বাবদ পরিশোধিত সমুদয় অর্থ চুক্তিতে নির্ধারিত পরিমাণ ক্ষতিপূরণসহ ৬ (ছয়) মাসের মধ্যে প্রাপকের হিসাবে প্রদেয়(account payee)চেকের মাধ্যমে ফেরৎ প্রদান করিবে ঃ
বে শর্ত থাকে যে, ক্রেতা ও ডেভেলপার যৌথ সম্মতিতে রিয়েল এস্টেট হস্তান্তরের সময়সীমা সম্পূরক চুক্তির মাধ্যমে বর্ধিত করিলে উপ-ধারা(২) এর বিধান অনুযায়ী ক্রেতাকে ক্ষতিপূরণ প্রদান করিতে হইবে। (২) উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বা হার পক্ষগণের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তিপত্রে উল্লেখ না থাকিলে পরিশোধিত সমুদয় অর্থের উপর ১৫% হারে ক্ষতিপূরণ নির্ধারিত হইবে এবং ডেভেলপার অনধিক ৬ (ছয়) মাসের মধ্যে অনূর্ধ্ব ৩ (তিন) কিস্তিতে ক্ষতিপূরনের অর্থসহ সমুদয় অর্থ পরিশোধ করিবে। (৩) উপ-ধারা (১) ও (২) এ বর্ণিত ক্ষতিপূরণের সময় গণনার ক্ষেত্রে সমুদয় অর্থ পরিশোধের তারিখ পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ সময় গণনা করিতে হইবে।
রিয়েল এস্টেট বন্ধক, ইত্যাদি১৬। (১) ডেভেলপার কর্তৃক বন্ধককৃত কোন রিয়েল এস্টেট ক্রেতা বরাবর বিক্রয় করা যাইবে না ঃ তবে শর্ত থাকে যে, ক্রেতার সম্মতিতে বরাদ্দকৃত কোন রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার কর্তৃক কোন ব্যক্তি, ব্যাংক বা অন্য কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিকট বন্ধক(mortgage) রাখা যাইবে। (২) ডেভেলপার কর্তৃক নির্মাণাধীন বা নির্মিত রিয়েল এস্টেট সম্পূর্ণভাবে বা উহার অংশবিশেষ কোন ব্যক্তি, ব্যাংক বা অন্য কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিকট ভূমি মালিকের সম্মতিক্রমে ডেভেলপার কর্তৃক বন্ধক(mortgage)রাখা যাইবে ঃ তবে শর্ত থাকে যে, হস্তান্তর দলিল সম্পাদনের পূর্বেই ডেভেলপারকে সংশ্লিষ্ট রিয়েল এস্টেট বন্ধক হইতে দায়মুক্ত করিতে হইবে।
ক্রেতা কর্তৃক অর্থ ফেরত গ্রহণের নিয়মাবলী১৭। কোন কারণে ক্রেতা লিখিত আবেদনের মাধ্যমে তাঁহার অনুকূলে প্রদত্ত বরাদ্দ বাতিলপূর্বক পরিশোধিত অর্থ ফেরত গ্রহণ করিতে চাহিলে, ডেভেলপার আনুষঙ্গিক ব্যয় বাবদ পরিশোধিত অর্থের ১০% অর্থ কর্তনপূর্বক অবশিষ্ট অর্থ ক্রেতাকে ৩ (তিন) মাসের মধ্যে এককালীন চেক বা পে-অর্ডারের মাধ্যমে ফেরত প্রদান করিবে।
স্থাপত্য নক্‌শা বা দখল হস্তান্তর পত্র প্রদান১৮।(১) এপার্টমেন্ট বা ফ্ল্যাট বা ফ্লোর স্পেস ক্রয় বা বিক্রয়ের চুক্তিপত্র বা বরাদ্দপত্রে প্রস্তবিত ভবনে যে সকল ফিটিংস, ফিক্সার, ইত্যাদি ব্যবহার করা হইবে উহার বিবরণী সুনির্দিষ্টভাবে লিপিবদ্ধ করিতে হইব। (২) স্থাপত্য ও কাঠামো নক্‌শা প্রণয়ন করিবার সময়Building Construction Act, 1952(Act No. II of 1953)এ বর্ণিত যোগ্যতাসম্পন্ন স্থপতি, প্রকৌশলী ও সংশ্লিষ্ট কারিগরী ব্যক্তিবর্গের দ্বারা নক্‌শা প্রণয়ন ও তদারকির ব্যবস্থা করিতে হইবে। (৩) স্থাপত্য ও কাঠামো নক্‌শা(Structural design)প্রণয়নে প্রযোজ্য ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড অনুসরণ করিত হইবে। (৪) উপ-ধারা (৩) এ বর্ণিত ক্ষেত্র ব্যতীত ভিন্ন কোন কারিগরী বিষয়ের জন্য ডেভেলপার প্রকৌশলী বা স্থপতি এর যৌথ ব্যবস্থাধীনে আন্তর্জাতিক মানের কোড অনুসরণ করা যাইবে। (৫) যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ব্যতীত অনুমোদিত নক্‌শার কোনরূপ পরিবর্তন করা যাইবে না। (৬) যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত এপার্টমেন্ট বা ফ্ল্যাট বা ফ্লোর স্পেস এর স্থাপত্য নক্‌শা এবং অনুমোদিত কারিগরী ব্যক্তি কর্তৃক প্রণীত কাঠামো নক্‌শা(Structural design)ও বিল্ডিং সার্ভিসেস (ইলেকট্রিক্যাল, মেকানিক্যাল, প্লাম্বিং, ইত্যাদি) এর নক্‌শার কপি এবং দখল হস্তান্তর পত্র বা ডেভেলপার কর্তৃক প্রতিস্বাক্ষর করিয়া ক্রেতাকে প্রদান করিতে হইবে।


ষষ্ঠ অধ্যায় : অপরাধ, বিচার ও দন্ড
নিবন্ধন ব্যতীত রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন কাজ করিবার দন্ড১৯। কোন ব্যক্তি ধারা ৫ এর অধীন নিবন্ধন গ্রহণ না করিয়া কোন রিয়েল এস্টেট ব্যবসা পরিচালনা করিলে তিনি অপরাধ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন এবং উক্ত অপরাধের জন্য অনূর্ধ্ব ২ (দুই) বৎসর কারাদন্ড অথবা অনূর্ধ্ব ১০(দশ) লক্ষ টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবেন।
অনুমোদন ব্যতীত রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু করিবার দন্ড২০। কোন ডেভেলপার যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন গ্রহণ ব্যতীত কোন রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন প্রকল্পের্‌ কাজ শুরু করিলে কিংবা অননুমোদিত রিয়েল এস্টেট প্রকল্পের বিজ্ঞাপন প্রচার বা বিক্রয় করিলে অনূর্ধ্ব ২ (দুই) বৎসর কারাদন্ড অথবা অনূর্ধ্ব ১০ (দশ) লক্ষ টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবেন।
সেবাসমূহের সংযোগ প্রদান না করিবার দন্ড২১। ধারা ১৩ তে বর্ণিত বিধান লংঘনের জন্য ডেভেলপার অনূর্ধ্ব ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থ দন্ডে, অনাদায়ে অনূর্ধ্ব ১ (এক) বৎসর বিনাশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত হইবে।
নোটিশ ব্যতীরেকে বরাদ্দ বাতিল বা স্থগিত করিবার দন্ড২২। ধারা ১৪ এর বিধান লংঘন করিয়া কোন ডেভেলপার রিয়েল এস্টেটের বরাদ্দ বাতিল করিলে অনূর্ধ্ব ১ (এক) বৎসর কারাদন্ড অথবা অনূর্ধ্ব ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবে।
রিয়েল এস্টেট বন্ধক রাখিবার দন্ড২৩। ধারা ১৬ এ বর্ণিত বিধান লংঘন করিয়া কোন ডেভেলপার রিয়েল এস্টেট বন্ধক রাখিলে ১ (এক) বৎসর কারাদন্ড অথবা অনূর্ধ্ব ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবে।
চুক্তিবদ্ধ রিয়েল এস্টেট পরিবর্তন করিবার দন্ড২৪। কোন ডেভেলপার চুক্তিতে প্রতিশ্রুত রিয়েল এস্টেট ক্রেতার নিকট বিক্রয় না করিয়া, ক্রেতার অজ্ঞাতে, অবৈধভাবে লাভবান হইবার উদ্দেশ্যে, অন্যত্র বিক্রয় করিলে অনূর্ধ্ব ৩ (তিন) বৎসর কারাদন্ড অথবা অনূর্ধ্ব ২০ (বিশ) লক্ষ টাকা অর্থ দন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবে।
প্রতিশ্রুত নির্মাণ উপকরণ ব্যবহার না করিবার দন্ড২৫। কোন ডেভেলপার ক্রেতার সহিত সম্পাদিত চুক্তির অধীন প্রতিশ্রুত নির্মাণ উপকরণের পরিবর্তে, অবৈধভাবে লাভবান হইবার উদ্দেশ্যে, নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করিলে বা যথাযথ পরিমাণ নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার না করিলে অনূর্ধ্ব ৩ (তিন) বৎসর কারাদন্ড অথবা অনূর্ধ্ব ২০ (বিশ) লক্ষ টাকা অর্থ দন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবে।
অনুমোদিত নক্‌শা বহির্ভূত নির্মাণের দন্ড২৬। কোন ডেভেলপার অনুমোদিত নক্‌শা বহির্ভূতভাবে রিয়েল এস্টেট নির্মাণ করিলে অনূর্ধ্ব ৩ (তিন) বৎসর কারাদন্ড অথবা অনূর্ধ্ব ২০ (বিশ) লক্ষ টাকা অর্থ দন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবে।
ডেভেলপার কতৃর্ক প্রতারণামূলক অপরাধের দন্ড২৭। যদি কোন ডেভেলপার কোন ভূমির মালিকের সহিত রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন বিষয়ে চুক্তি সম্পাদন করিয়া বা ক্রেতা বরাবর রিয়েল এস্টেটের বরাদ্দপত্র সম্পাদন করিয়া তদনুযায়ী কোন কার্যক্রম গ্রহণ না করে বা আংশিক কার্যক্রম গ্রহণ করিয়া বিনা কারণে অবশিষ্ট কাজ অসম্পাদিত অবস্থায় ফেলিয়া রাখে এবং তজ্জন্য ভূমির মালিককে বা, ক্ষেত্রমত, ক্রেতাকে কোনরূপ আর্থিক সুবিধা প্রদান না করে তাহা হইলে উহা এই আইনের অধীন একটি প্রতারণামূলক অপরাধ বলিয়া গণ্য হইবে এবং উক্ত অপরাধের জন্য ডেভেলপার অনূর্ধ্ব ২ (দুই) বৎসর কারাদন্ড অথবা অনূর্ধ্ব ২০ (বিশ) লক্ষ টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবে।
ভূমির মালিক কর্তৃক নির্দিষ্ট সময়ে ডেভেলপার বরাবরে ভূমির দখল হস্তান্তর না করিবার দন্ড২৮। কোন ডেভেলপারের সহিত কোন ভূমির মালিক রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনার জন্য চুক্তিবদ্ধ হইবার পর চুক্তিতে উল্লিখিত সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ভূমির দখল ডেভেলপারের অনুকূলে হস্তান্তর না করিলে অনূর্ধ্ব ২ (দুই) বৎসর কারাদন্ড অথবা অনূর্ধ্ব ১০ (দশ) লক্ষ টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবে।
ভূমির মালিক কর্তৃক সম্পাদিত আম-মোক্তারনামা বাতিলের দন্ড২৯। কোন ডেভেলপারের সহিত কোন ভূমির মালিক রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনার জন্য চুক্তিবদ্ধ হইবার পর চুক্তির শর্ত মোতাবেক ডেভেলপারের অনুকূলে সম্পাদিত রেজিষ্ট্রার্ড আম-মোক্তারনামা অন্যূন ৩০ (ত্রিশ) দিন পূর্বে নোটিশ না দিয়া বাতিল করিলে অনূর্ধ্ব ২ (দুই) বৎসর কারাদন্ড অথবা অনূর্ধ্ব ১০ (দশ) লক্ষ টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবে।
ডেভেলপার কর্তৃক ভূমির মালিকের অংশ বুঝাইয়া না দেওয়ার দন্ড৩০। কোন ভুমির মালিকের সহিত কোন ডেভেলপার কোন রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনার জন্য চুক্তিবদ্ধ হইবার পর চুক্তির শর্ত মোতাবেক রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন যথাযথভাবে সম্পন্ন করিয়া নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভূমির মালিকের অংশ ভূমির মালিকের অনুকূলে হস্তান্তর না করিলে কিংবা ক্ষেত্রমত, দখল বুঝাইয়া না দিলে অনূর্ধ্ব ২ (দুই) বৎসর কারাদন্ড অথবা ২০ (বিশ) লক্ষ টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবে।
কোম্পানী কতৃর্ক অপরাধ সংঘটন৩১। এই আইনের অধীন কোন ডেভেলপার নিগমিত(incorporated)কোম্পানী হইলে উক্ত কোম্পানীর মালিক, পরিচালক বা কোন কর্মকর্তা যাহার জ্ঞাতসারে এবং অংশগ্রহণে এই আইনের অধীন কোন অপরাধ সংঘটিত হইবে তিনি উক্ত অপরাধের জন্য ব্যক্তিগতভাবে দায়ী হইবেন।
অপরাধ বিচারার্থ গ্রহণ, ইত্যাদি৩২। অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন দন্ডনীয় অপরাধসমূহ আপোষযোগ্য(compoundable),জামিনযোগ্য(bailable)এবং অ-আমলযোগ্য(non-cognizable)হইবে।
বিচার৩৩।(১) ফৌজদারী কার্যবিধিতে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন অপরাধসমূহ প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট বা মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট কতৃর্ক বিচার্য হইবে। (২) এই আইনে ভিন্নতর কিছু না থাকিলে, এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধের বিচার সংক্ষিপ্ত পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হইবে এবং এতদুদ্দেশ্যে ফৌজদারী কার্যবিধির Chapter XXII তে বর্ণিত পদ্ধতি, যতদুর সম্ভব, প্রযোজ্য হইবে।
অর্থদন্ড আরোপের ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেটের বিশেষ ক্ষমতা৩৪। ফৌজদারী কার্যবিধিতে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীন কোন প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট বা মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিকে সংশ্লিষ্ট অপরাধের জন্য এই আইনে অনুমোদিত যে কোন দন্ড আরোপ করিতে পারিবে।
আদায়কৃত অর্থ বণ্টন৩৫।(১) এই অধ্যায়ের অধীন দোষী সাব্যস্ত ও দন্ডিত ডেভেলপারের নিকট হইতে অর্থ দন্ড বাবদ কোন অর্থ আদায় হইলে আদালত আদায়কৃত অর্থের অনূর্ধ্ব ৫০% ক্ষতিগ্রস্থ ভূমি মালিক বা ক্ষেত্রমত, ক্রেতার অনুকূলে এবং অবশিষ্ট অংশ রাষ্ট্রের অনুকূলে প্রদান করার আদেশ দিতে পারিবে। (২) আদালত উপ-ধারা(১) এর অধীন বণ্টন সম্পর্কিত কোন আদেশ প্রদান না করিলে সমুদয় অর্থ রাষ্ট্রের অনুকূলে জমাকৃত হইবে।



সপ্তম অধ্যায় : বিবিধ
বিরোধ নিষ্পত্তি৩৬।(১) রিয়েল এস্টেট প্রকল্প বাস্তবায়নের যে কোন পর্যায়ে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ক্রেতা, ডেভেলপার, অথবা ভূমির মালিকের মধ্যে এই আইনের ধারা ২১, ২২, ২৩, ২৪, ২৫, ২৭, ২৮, ২৯ এবং ৩০ এ বর্ণিত অপরাধের জন্য বা তাহাদের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তির কোন বিধান লংঘনের জন্য মতবিরোধের সৃষ্টি হইলে পক্ষগণ, প্রথমে নিজেদের মধ্যে আপোষ উহা নিষ্পত্তির চেষ্টা করিবেন। (২) উপ-ধারা (১) অনুযায়ী আপোষের পদক্ষেপ গ্রহণের পর যদি কোন পক্ষের সহযোগিতার জন্য উহা ব্যর্থ হয় তবে অপর পক্ষ বিবাদমান বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য সালিস আইন, ২০০১ মোতাবেক সালিসী ট্রাইব্যুনালে যাওয়ার অভিপ্রায় ব্যক্ত করিয়া অপর পক্ষকে নোটিশ প্রদান করিবেন। (৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন নোটিশ প্রাপক উক্ত নোটিশ প্রাপ্তির ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে নোটিশ প্রেরকের সহিত যৌথভাবে সালিসী ট্রাইব্যুনাল গঠন করিবেন। (৪) সালিস আইন, ২০০১ এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, পক্ষগণ কর্তৃক গঠিত সালিসী ট্রাইব্যুনালের রোয়েদাদ পক্ষগণ এবং তাহাদের মাধ্যমে বা অধীনে দাবীদার যে কোন ব্যক্তির উপর বাধ্যকর হইবে এবং উহার বিরুদ্ধে কোন আদালতে কোন পক্ষের আপত্তি উত্থাপনের অধিকার থাকিবে না। (৫) উপ-ধারা (৩) মোতাবেক পক্ষগণ সালিসী ট্রাইব্যুনাল গঠনে ব্যর্থ হইলে যে কোন পক্ষ বিবাদমান বিষয়টি বিচারের জন্য এই আইনের অধীন উপযুক্ত আদালতে মামলা দায়ের করিতে পারিবেন।
চলমান প্রকল্পের ক্ষেত্রে এই আইনের প্রয়োগ৩৭। এই আইন বলবৎ হইবার অব্যবহিতপূর্বে চলমান প্রকল্পসমূহের ক্ষেত্রে ভূমি মালিক, ডেভেলপার ও ক্রেতার মধ্যে সম্পাদিত স্ব-স্ব চুক্তির বিধানাবলীকে ক্ষুন্ন না করিয়া এই আইনের বিধানাবলী, যতদূর সম্ভব, প্রযোজ্য হইবে।
বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা৩৮।(১) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে। (২) বিশেষ করিয়া এবং উপ-ধারা (১) এর সামগ্রিকতাকে ক্ষুন্ন না করিয়া, সরকার নিম্নবর্ণিত যে কোন বিষয়ে বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে, যথা ঃ- (ক) নিবন্ধন প্রদান, নবায়ন, বাতিল ও সংশোধনের পদ্ধতি ও শর্তাবলী ; (খ) রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন, সংশোধন ও নবায়নের পদ্ধতি ও শর্তাবলী ; (গ) নিবন্ধিত ডেভেলপারদের তালিকা সংরক্ষণ ও প্রকাশ পদ্ধতি ; এবং (ঘ) রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন প্রকল্পের লে-আউট প্ল্যান প্রণয়নের পদ্ধতি ও শর্তাবলী।
হেফাজত সংক্রান্ত বিশেষ বিধান৩৯।(১) রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০০৮ (২০০৮ সনের ৫৬ নং অধ্যাদেশ), অতঃপর উক্ত অধ্যাদেশ বলিয়া উল্লিখিত, এর অধীন কৃত কাজকর্ম বা গৃহীত ব্যবস্থা এই আইনের অধীন কৃত বা গৃহীত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে। (২) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৯৩ এর দফা (২) এর বিধান অনুসারে উক্ত অধ্যাদেশের কার্যকারিতা লোপ পাওয়া সত্ত্বেও অনুরূপ লোপ পাইবার পর উহার ধারাবাহিকতায় বা বিবেচিত ধারাবাহিকতায় কোন কাজকর্ম কৃত বা ব্যবস্থা গৃহীত হইয়া থাকিলে উহা এই আইনের অধীনে কৃত বা গৃহীত হইয়াছে বলিয়াও গণ্য হইবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

buttons=(Accept !) days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Learn More
Accept !
To Top