সরকারি চাকরিজীবীদের বিভিন্ন প্রকারের ছুটি সম্পর্কে বিস্তারিত টিঃ-

0

 ছুটি সম্পর্কিত নিয়মাবলি The Prescribed Leave Rules 1959, Fundamental Rules, Bangladesh Service Rules এবং সময়ে সময়ে সরকার কর্তৃক জারিকৃত আদেশ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। উক্ত বিধিমালা ও বিভিন্ন আদেশের আওতায় নিম্নোক্ত প্রকার ছুটির বিধান রয়েছে।

সরকারি চাকরিজীবীদের বিভিন্ন প্রকারের ছুটি সম্পর্কে বিস্তারিত টিঃ- 


(১) কোন কর্মচারী নিম্নবর্ণিত যে কোন ধরণের ছুটি পা্ইবেন, যথাঃ

(ক) পূর্ণ বেতনে ছুটি;

(খ) অর্ধ বেতনে ছুটি;

(গ) বিনা বেতনে অস্বাধারণ ছুটি (Without Pay Extraordinary Leave);

(ঘ) বিশেষ অক্ষমতাজনিত ছুটি (Special Disability Leave);

(ঙ) সংগনিরোধ ছুটি (Quarantine Leave);

(চ) প্রসূতি ছুটি (Maternity Leave);

(ছ) অধ্যয়ন ছুটি (Study Leave); এবং

(জ) নৈমিত্তিক ছুটি (Casual Leave) ।

(২) উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কোন কর্মচারীকে বিশেষ অক্ষমতাজনিত ছুটি ও অধ্যয়ন ছুটি ব্যতীত অন্যবিধ ছুটি মঞ্জুর করিতে পারেন এবং ইহা বন্ধের দিনের সাথে সংযুক্ত করিয়াও প্রদান করা যাইতে পারে।


পূর্ণ বেতনে ছুটিঃ

(১) প্রত্যেক কর্মচারী তৎকর্তৃক দায়িত্ব পালনে অতিবাহিত কার্যদিবসের ১/১১ হারে পূর্ণ বেতনে ছুটি অর্জন করিবেন এবং পূর্ণ বেতনে প্রাপ্য এককালীন ছুটির পরিমাণ চার মাসের অধিক হইবে না। 

(২) ………….এর পূর্ব অনুমোদন নিয়ে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ বিশেষ অক্ষমতাজনিত ছুটি ও অধ্যয়ন ছুটি মঞ্জুর করিতে পারেন।

(৩) অর্জিত ছুটির পরিমাণ চার মাসের অধিক হলে, তাহা ছুটির হিসাবের অন্য খাতে জমা দেখানো হইবে, ইহা হইতে ডাক্তারী সার্টিফিকেট উপস্থাপন সাপেক্ষে অথবা বাংলাদেশের বাইরে ধর্মীয় সফর, অধ্যয়ন বা অবকাশ ও চিত্তবিনোদনের জন্য পূর্ণ বেতনে ছুটি মঞ্জুর করা যাইতে পারে।


অর্ধ বেতনে ছুটিঃ

(১) প্রত্যেক কর্মচারী তৎকর্তৃক দায়িত্ব পালনে অতিবাহিত কার্য দিবসের ১/১২ হারে অর্ধ বেতনে অর্জন করিবেন এবং এইরূপ ছুটি জমা হওয়ার কোন সীমা থাকিবে না।

(২) অর্ধ-বেতনে দুই দিনের ছুটির পরিবর্তে, ডাক্তারী সার্টিফিকেট দাখিল সাপেক্ষে, এক দিনের পূর্ণ বেতনে ছুটির হারে গড় বেতনে ছুটিতে সর্বোচ্চ বার মাস পর্যন্ত পূর্ণ বেতনে ছুটিতে রূপান্তরিত করা যাইতে পারে।


প্রাপ্যতাবিহীন ছুটি: 

১) ডাক্তারী সার্টিফিকেট দ্বারা সমর্থিত হইলে, কোন কর্মচারীকে তাহার সমগ্র চাকুরী জীবনে সর্বোচ্চ বার মাস পর্যন্ত এবং অন্য কোন কারণে হইলে, তিন মাস পর্যন্ত অর্ধ বেতনে ছুটি মঞ্জুর করা যাইতে পারে।

(২) যখন কোন কর্মচারী তাহার ছুটি পাওনা হওয়ার পূর্বেই প্রাপ্যতাবিহীন ছুটি ভোগ করিয়া ফিরিয়া আসেন তখন তিনি পূর্বেই যে ছুটি ভোগ করিয়াছেন সেই ছুটি অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত নূতনভাবে গড় অর্ধ বেতনে কোন ছুটি পাইবার অধিকারী হইবেন না।


অসাধারণ ছুটি: 

(১) যখন কোন কর্মচারীর অন্য কোন ছুটি পাওনা না থাকে বা অন্য প্রকার কোন ছুটি পাওনা থাকে অথচ সংশিলষ্ট কর্মচারী লিখিতভাবে অস্বাভাবিক ছুটির জন্য আবেদন করেন তখন তাহাকে অসাধারণ ছুটি মঞ্জুর করা যাইতে পারে।

(২) অসাধারণ ছুটির মেয়াদ একবারে তিন মাসের অধিক হইবে না, তবে নিম্ন বর্ণিত ক্ষেত্রে উক্ত ছুটির মেয়াদ বর্ধিত করা যাইতে পারে,

(ক) যে ক্ষেত্রে সংশিলষ্ট কর্মচারী এই শর্তে বিদেশে প্রশিক্ষণ গ্রহণের অনুমতি প্রাপ্ত হন যে, উক্ত প্রশিক্ষণ গ্রহণের পরে পাঁচ বৎসরের জন্য তিনি …………… এ চাকুরী করিবেন, অথবা

(খ) যে ক্ষেত্রে সংশিলষ্ট কর্মচারী চিকিৎসাধীন থাকেন; অথবা

(গ) যে ক্ষেত্রে …………………. এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, কর্মচারী তাহার নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কারণে কর্তব্যে যোগদান করিতে অসমর্থ।

(৩) ছুটি মঞ্জুর করার ক্ষমতা সম্পন্ন কর্তৃপক্ষ কোন কর্মচারীর বিনা ছুটিতে অনুপস্থিতির সময়কে ভূতাপেক্ষ কার্যকরতাসহ অসাধারণ ছুটিতে রূপান্তরিত করিতে পারেন।

বিশেষ অক্ষমতাজনিত ছুটিঃ

(১) কোন কর্মচারী তাঁহার যথাযথ কর্তব্য পালনকালে বা উহা পালনের পরিণতিতে অথবা তাঁহার পদে অধিষ্ঠিত থাকিবার কারণে আঘাতপ্রাপ্ত হইয়া অক্ষম হইলে, ……………..তাঁহাকে বিশেষ অক্ষমতা ছুটি মঞ্জুর করিতে পারে।

(২) যে অক্ষমতার কারণে অক্ষমতাজনিত ছুটি চাওয়া হয় সেই অক্ষমতা তিন মাসের মধ্যে প্রকাশ না পাইলে এবং যে ব্যক্তি অক্ষম হন, সেই ব্যক্তি অনুরূপ অক্ষমতার কারণে অবিলম্বে …………. কে অবহিত না করিলে, বিশেষ অক্ষমতাজনিত ছুটি মঞ্জুর করা হইবে না।

(৩) যে মেয়াদের জন্য বিশেষ অক্ষমতাজনিত ছুটি প্রয়োজনীয় বলিয়া চিকিৎসা পরিষদ প্রত্যায়ন করিবে সেই মেয়াদের জন্য বিশেষ অক্ষমতাজনিত ছুটি মঞ্জুর করা হইবে, এবং চিকিৎসা পরিষদের প্রত্যায়ন ব্যতিরেকে তাহা বর্ধিত করা হইবে না; এবং উক্ত ছুটি কোন ক্রমেই ২৪ মাসের অধিক হইবে না।

(৪) বিশেষ অক্ষমতাজনিত ছুটি অন্য যে কোন ছুটির সংগে সংযুক্ত করা যাইতে পারে।

(৫) যদি একই ধরণের অবস্থায় পরবর্তীকালে কোন সময় অক্ষমতা বৃদ্ধি পায় বা উহার পুনরাবৃত্তি ঘটে, তাহা হইলে একাধিকবার বিশেষ অক্ষমতাজনিত ছুটি মঞ্জুর করা যাইবে, তবে অনুরূপ ছুটির পরিমাণ ২৪ মাসের অধিক হইবে না এবং তাহা যে কোন একটি অক্ষমতার কারণে মঞ্জুর করা যাইবে।

(৬) শুধুমাত্র আনুতোষিকের এবং যে ক্ষেত্রে অবসর ভাতা প্রাপ্য হয় সেক্ষেত্রে অবসর ভাতার ব্যাপারে চাকুরী হিসাব করিবার সময় বিশেষ অক্ষমতাজনিত ছুটি কর্তব্য পালনের সময় হিসাবে গণনা করা হইবে এবং ইহা ছুটির হিসাব হইতে বিয়োজন করা হইবে না।

(৭) বিশেষ অক্ষমতাজনিত ছুটিকালীন বেতন হইবে নিম্নরূপ যথাঃ¾

(ক) উপরিউক্ত উপ-প্রবিধান (৫) এর অধীনে মঞ্জুরকৃত ছুটির মেয়াদসহ যে কোন মেয়াদের ছুটির প্রথম চার মাসের জন্য পূর্ণ বেতন; এবং

(খ) এইরূপ কোন ছুটির অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য অর্ধ বেতন।


(৮) এই প্রবিধানের অন্যান্য বিধানসমূহের প্রযোজ্যতা এমন কর্মচারীর ক্ষেত্রেও সম্প্রসারিত করা যাইতে পারে যিনি তাহার যথাযথ কর্তব্য পালনকালে বা উহা পালনের পরিণতিতে অথবা তাঁহার পদে অধিষ্ঠিত থাকিবার কারণে, দুর্ঘটনাবশতঃ আঘাতপ্রাপ্ত হইয়াছেন অথবা যিনি নির্দিষ্ট কোন কর্তব্য পালনকালে তাঁহার পদের স্বাভাবিক ঝুকি বহির্ভূত অসুস্থতা বা জখম বাড়াইয়া তোলার সম্ভাবনা থাকে এইরূপ অসুস্থতার দরচণ অক্ষম হইয়াছেন।

সঙ্গ নিরোধ ছুটি (Quarantine Leave)

সঙ্গ নিরোধ ছুটি সম্পর্কে বি, এস, আর -১৯৬ এর নিম্নরূপঃ

(১) কোন কর্মচারীর পরিবারে বা গৃহে সংক্রামক ব্যাধি থাকার কারণে যদি আদেশ দ্বারা তাহাকে অফিসে উপস্থিত না হওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয় তবে সেই সময়কাল হইবে সঙ্গনিরোধ ছুটি।

(২) অফিস প্রধান কোন চিকিৎসক কর্মকর্তা বা জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তার সার্টিফিকেটের ভিত্তিতে অনুর্ধ ২১ দিন অথবা বিশেষ অবস্থায় ৩০ দিন পর্যন্ত সঙ্গনিরোধ ছুটি মঞ্জুর করিতে পারিবেন।

(৩) সংগরোধের জন্য প্রয়োজনীয় উপ-প্রবিধান (২) এ উল্লেখিত মেয়াদের অতিরিক্ত ছুটি প্রয়োজন হইলে এই অতিরিক্ত ছুটি সাধারণ ছুটি হিসাবে গণ্য হইবে।

(৪) এই প্রবিধানমালা অনুযায়ী প্রাপ্য সর্বাধিক ছুটি সাপেক্ষে, প্রয়োজন হইলে অন্যবিধ ছুটির সহিত সংগরোধ ছুটিও মঞ্জুর করা যাইতে পারে।

(৫) সংগরোধ ছুটিতে থাকাকালে কোন কর্মচারীকে তাহার দায়িত্ব পালনে অনুপস্থিত বলিয়া গণ্য করা হইবে না এবং এই সময়ে উক্ত পদে অন্য কোন লোক নিয়োগ করা যাইবে না। ইহাছাড়া, উক্ত ছুটি ভোগকালে সংশ্লিষ্ট কর্মচারী স্বাভাবিক নিয়মানুসারে বেতন ভাতাদি পাইবেন।

(৬) এই প্রকার ছুটির মঞ্জুরকারী কর্তৃপক্ষ অফিস প্রধান।

বিশ্লেষণঃ ১) কলেরা, গুটি বসন্ত, প্লেগ, টাইফয়েড জ্বর এবং সেরিব্রোস্পাইনাল মেনেনজস্ট্যাটিস রোগের ক্ষেত্রে এই প্রকার ছুটি প্রদান করা যাইবে (স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্মারক নং জনস্বাস্থ্য/১ কিউ-৪/৩৪২, তারিখ: ২৩ এপ্রিল, ১৯৭৫)।

 বিশ্লেষণঃ ২) এই প্রকার ছুটি “ ছুটি হিসাব ” হইতে বিয়োগ হয় না এবং নৈমিত্তিক ছুটির অনুরূপভাবে ছুটির হিসাবের জন্য এই প্রকার ছুটিকালকে কর্মকাল হিসাবে গণ্য করা হয়। 

প্রসূতি (মাতৃত্ব) ছুটি সংক্রান্ত বিধি বিধান

বি এস আর -১৯৭, এফ আর-১০১ এবং এস আর (এফ আর)-২৬৭, ২৬৮

ক) গর্ভবতী হওয়ার পর কোন মহিলা কর্মচারী প্রসূতি ছুটির জন্য আবেদন করিলে, বিধি-১৪৯ অথবা বিধি-১৫০ তে বর্ণিত কর্তৃপক্ষ ছুটি আরম্ভের তারিখ অথবা সন্তান প্রসবের উদ্দেশ্যে আতুর ঘরে আবদ্ধ হওয়ার তারিখ, ইহার মধ্যে যাহা পূর্বে ঘটিবে, ঐ তারিখ হইতেই ৬ (ছয়) মাসের ছুটি মঞ্জুর করিতে হইবে। তবে উক্ত ছুটি আরম্ভের তারিখ সন্তান প্রসবের উদ্দেশ্যে আতুর ঘরে আবদ্ধ হওয়ার তারিখের পরবর্তী কোন তারিখ হইতে পারিবে না। অর্থাৎ ছুটি আরম্ভের সর্বশেষ তারিখ হইবে সন্তান প্রসবের তারিখ। উল্লেখ্য গর্ভবতী হওয়ার স্বপক্ষে ডাক্তারী সার্টিফিকেটসহ আবেদন করা হইলে প্রসূতি ছুটির আবেদন না মঞ্জুর করার কিংবা ছয় মাস অপেক্ষা কম সময়ের জন্য ছুটি মঞ্জুর করার কিংবা ছুটি আরম্ভের তারিখ পরিবর্তন করিবার ক্ষমতা ছুটি মঞ্জুরকারী কর্তৃপক্ষের নাই। বি এস আর - ১৯৭ (১)

খ) গেজেটেড কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে সরকার অথবা সরকার কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং নন-গেজেটেড কর্মচারীদের ক্ষেত্রে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ অথবা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্তকর্তা এই ছুটি মঞ্জুরীর জন্য ক্ষমতাপ্রাপ্ত। অর্থাৎ উভয় ক্ষেত্রেই অর্জিত ছুটি মঞ্জুরকারী কর্তৃপক্ষ প্রসূতি ছুটি মঞ্জুরীর জন্য ক্ষমতাপ্রাপ্ত। বি এস আর - ১৯৭ (১), ১৪৯ ও ১৫০

গ) সমগ্র চাকরি জীবনে প্রসূতি ছুটি দুইবারের বেশি প্রাপ্য নয়। বি এস এর- ১৯৭ (১)

ঘ) প্রসূতি ছুটি “ছুটি হিসাব” হইতে বিয়োগ হইবে না। অর্থাৎ প্রসূতি ছুটির জন্য ছুটি অর্জন করিতে হইবে না এবং পাওনা ছুটি হইতে প্রসূতি ছুটিকাল বাদ যাইবে না। বি এস এর- ১৯৭ (১বি)

ঙ) ছুটি ভোগকালে ছুটিতে যাওয়ার প্রাক্কালে প্রাপ্র বেতনের হারে পূর্ণ বেতন প্রাপ্য। বি এস এর- ১৯৭ (১)

চ) ডাক্তারী সার্টিফিকেটের ভিত্তিতে গড় বেতনে অর্জিত ছুটিসহ যে কোন প্রকার ছুটির আবেদন করিলে প্রসূতি ছুটির ধারাবাহিকতাক্রমে উক্ত প্রকার ছুটি মঞ্জুর করা যাইবে। এফ আর এর এস আর -২৬৮ এবং বি এস আর-১৯৭(২)

ছ) অস্থায়ী সরকারি কর্মচারীও প্রসূতি ছুটি প্রাপ্য। এফ আর এর এস আর -২৬৭ এর সরকারি সিদ্ধান্ত

বিশ্লেষণ: এসআরও নং ৮৪/নথি নং- ০৭.০০.০০০০.১৭১.০৮.০০১.১২/আইন/২০১২, তারিখ: ১ এপ্রিল ২০১২ দ্বারা সন্তান প্রসবের সম্ভাব্য তারিখে চাকরির মেয়াদ নয় মাস পূর্ণ হয় নাই, এইরূপ অস্থায়ী কর্মচারীওক প্রসূতি ছুটি প্রদান না করা সংক্রান্ত বি এস এর, পার্ট-১ এর বিধি ১৯৭ এর নোট বিলুপ্ত করায় চাকরির মেয়াদ নির্বিশেষে সকল অস্থায়ী কর্মচারীগণও প্রসূতি ছুটি পাইবেন।

জ) মহিলা শিক্ষানবীশ (Lady Apprentices) এবং পার্ট-টাইম মহিলা ল’অফিসারও প্রসূতি ছুটি প্রাপ্য। এফ আর এর এস আর-২৬৭ এর সরকারি সিদ্ধান্ত।

বিশ্লেষণঃ ১) ডাক্তার কাউকে গর্ভবতী ঘোষনা করে সার্টিফিকেট প্রদান করলে সেই সার্টিফিকেটসহ প্রসূতি ছুটির আবেদন করলে কারো সাধ্য নেই ছুটি না মঞ্জুর করার। আর এটা সমগ্র চাকরি জীবনে ২ (দুই) বার পাওয়া যাবে।

বিশ্লেষণঃ ২) সন্তান প্রসবের দিন হতে অথবা তার আগের যেকোন দিন হতে ৬ (ছয়) মাস ছুটির জন্য আবেদন করা যাবে।

বিশ্লেষণঃ ৩) ছুটিতে থাকাকালীন সময়ে প্রসূতি মাতা পূর্ণ বেতন পাইবেন।

বিশ্লেষণঃ ৪) এই ছুটির সাথে অন্য ছুটি নেওয়া যাবে সেক্ষেত্রে একদিনের জন্য কর্মে যোগদান করে আবার ছুটি নেয়ার মতো কোন ফালতু বিষয় নেই।

বিশ্লেষণঃ ৫) সরকারি কর্মচারী চাকরি যোগদান করার পরদিন থেকেও এই ছুটি ভোগ করতে পারবেন। আগে এটা ছিল চাকরি ৯ (নয়) মাস পূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে। আইনটি যারা তৈরি করেছিলেন তারা হয়তো ভেবেছিলেন চাকরিতে যোগদানের পরই সরকারি চাকরিজীবি মহিলাদের বিয়ে হয় আর ৯ মাস পর বাচ্চা প্রসব হয়।

বিশ্লেষণঃ ৬) ৬ (ছয়) মাস মানে ৬ (ছয়) মাস। এটা ১৮০ দিনও হতে পারে আবার কম বেশিও্ হতে পারে। এটা নিয়ে রশি টানাটানি করতে করতে বাচ্চা প্রসব হয়ে গেলে দায় কে নিবে আমি জানিনা।

অপ-ব্যাখ্যাঃ ১) কোন এক উর্ধতন কর্তৃপক্ষ তার মহিলা কর্মচারিকে ২য় মাতৃত্ব ছুটি মঞ্জুর করবেন না বলে মত দিয়েছেন। ব্যাখ্যা হিসেবে বলেছেন ঐ মহিলা ইতোমধ্যেই দুই সন্তারের জননী যদিও প্রথম বাচ্চা চাকরিতে যোগদানের পূর্বেই জন্মগ্রহণ করেছে। আমার বড় ইচ্ছে হয় সেই কর্তাব্যক্তিটিকে দেখার।

অবসর গ্রহণের জন্য প্রস্ত্ততিমূলক ছুটি (বিলোপ):

(১) কোন কর্মচারী ছয় মাস পর্যন্ত পূর্ণ বেতনে এবং আরও ছয় মাস অর্ধ বেতনে অবসর গ্রহণের জন্য প্রস্ত্ততিমূলক ছুটি পাইবেন এবং এইরূপ ছুটির মেয়াদ তাহার অবসর গ্রহণের তারিখ অতিক্রম করার পরেও সম্প্রসারিত করা যাইতে পারে, কিন্তু আটান্ন বৎসরের বয়স-সীমা অতিক্রমের পর উহা সম্প্রসারণ করা যাইবে না।

(২) কোন কর্মচারী তাহার অবসর গ্রহণের তারিখের কমপক্ষে একমাস পূর্বে অবসর গ্রহণের প্রস্ত্ততিমূলক ছুটির জন্য আবেদন না করিলে তাহার পাওনা ছুটি অবসর গ্রহণের তারিখের পর তামাদি হইয়া যাইবে।

(৩) কোন কর্মচারী তাহার অবসর গ্রহণের তারিখের কমপক্ষে একদিন পূর্বে অবসর গ্রহণের জন্য প্রস্ত্ততিমূলক ছুটিতে যাইবেন।

অধ্যয়ন ছুটিঃ 

(১) …………….এ তাহার চাকুরীর জন্য সহায়ক এইরূপ বৈজ্ঞানিক, কারিগরি বা অনুরূপ সমস্যাদি অধ্যয়ন অথবা বিশেষ প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশ গ্রহণের জন্য কোন কর্মচারীকে ………… অর্ধ বেতনে অনধিক বার মাস অধ্যয়নের জন্য ছুটি মঞ্জুর করিতে পারেন, যাহা তাহার ছুটির হিসাব হইতে বাদ দেওয়া হইবে না।

(২) যে ক্ষেত্রে কোন কর্মচারীকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কোন অধ্যয়ন ছুটি মঞ্জুর করা হয় এবং তিনি পরবর্তীকালে দেখিতে পান যে, মঞ্জুরীকৃত ছুটির মেয়াদ তাহার শিক্ষা কোর্স ও পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় মেয়াদ অপেক্ষা কম, সে ক্ষেত্রে সময়ের স্বল্পতা পূরণকল্পে …………. তাহাকে অনধিক এক বৎসরের জন্য উক্ত অধ্যয়ন ছুটির মেয়াদ বর্ধিত করিতে পারিবেন।

(৩) পূর্ণ বেতনে বা অর্ধ বেতনে ছুটি বা বিনা বেতনে অসাধারণ ছুটির সহিত একত্রে অধ্যয়ন ছুটি মঞ্জুর করা যাইতে পারে, তবে এইরূপ মঞ্জুরকৃত ছুটি কোনক্রমেই একত্রে মোট দুই বৎসরের অধিক হইবে না।

নৈমিত্তিক ছুটিঃ 

সরকার সময়ে সময়ে উহার কর্মচারীদের জন্য প্রতি পঞ্জিকা বৎসরে মোট যতদিন নৈমিত্তিক ছুটি নির্ধারণ করিবেন কর্মচারীগণ মোট ততদিন নৈমিত্তিক ছুটি পাইবেন।

ছুটির পদ্ধতিঃ-

(১) প্রত্যেক কর্মচারীর ছুটির হিসাব…………কর্তৃক নির্ধারিত নিয়ম ও পদ্ধতিতে রক্ষণাবেক্ষণ করা হইবে।

(২) ছুটির জন্য সকল আবেদন ……………কর্তৃক নির্ধারিত ফরমে হইতে হইবে।

(৩) আবেদনকারী কর্মচারী যে কর্মকর্তার অধীনে কর্মরত আছেন তাহার সুপারিশক্রমে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ ছুটি মঞ্জুর করিতে পারেন।

(৪) বিশেষ পরিস্থিতিতে, কোন কর্মকর্তা যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, তাহার অধীনে কর্মরত কোন কর্মচারীর ছুটি পাওনা রহিয়াছে, তবে তিনি আনুষ্ঠানিক মঞ্জুরী আদেশ সাপেক্ষে, তাহাকে অনুর্ধ ১৫ দিনের জন্য ছুটিতে যাইবার অনুমতি দিতে পারেন।

ছুটিকালীন বেতন: 

(১) কোন কর্মচারী পূর্ণ বেতনে ছুটিতে থাকাকালে উক্ত ছুটি আরম্ভের পূর্বে তিনি সর্বশেষ যে বেতন পাইয়াছেন সেই বেতনের সমান হারে ছুটিকালীন বেতন পাইবার অধিকারী হইবেন।

(২) কোন কর্মচারী অর্ধ বেতনে ছুটিতে থাকাকালে উক্ত ছুটি আরম্ভের পূর্বে তিনি সর্বশেষ যে বেতন পাইয়াছেন সেই বেতনের অর্ধ হারে ছুটিকালীন বেতন পাইবার অধিকারী হইবেন।

ছুটি হইতে প্রত্যাবর্তন করানোঃ

ছুটি ভোগরত কোন কর্মচারীকে ছুটির মেয়াদ শেষ হইবার পূর্বে দায়িত্ব পালনের জন্য তলব করা যাইতে পারে এবং তাহাকে অনুরূপভাবে তলব করা হইলে, তিনি যে কর্মস্থলে ফিরিয়া আসিবার জন্য নির্দেশিত হইয়াছেন, উহার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়ার তারিখ হইতে তাহাকে কর্মরত বলিয়া গণ্য করা হইবে এবং এই এতদুদ্দেশ্যে ভ্রমণের জন্য তিনি ভ্রমণ ভাতা পাইবার অধিকারী হইবেন।

ছুটির নগদায়নঃ- 

(১) যে কর্মচারী অবসর ভাতা বা ভবিষ্য তহবিলের সুবিধা গ্রহণের জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন নাই, তিনি তাঁহার সম্পূর্ণ চাকুরীকালের জন্য সর্বাধিক ১৮ মাস পর্যন্ত, প্রতি বৎসরে প্রত্যাখাত ছুটির ৫০% ভাগ নগদ টাকায় রূপান্তরিত করার জন্য অনুমতি পাইতে পারেন।

(২) সর্বশেষ মূল বেতনের ভিত্তিতে উপ-প্রবিধান (১) এ উল্লেখিত ছুটি নগদ টাকায় রূপান্তরিত করা যাইবে।

(ছুটি বিধি: ছিদ্দিকুর রহমান মিয়া, 

বিচারপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট)

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

buttons=(Accept !) days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Learn More
Accept !
To Top