ফৌজদারী কার্যবিধি,1898

0

গ্রেফতার কি? গ্রেফতারী পরোয়ানা ব্যতীত কখন একজন পুলিশ অফিসার কোন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করতে পারে? পুলিশ ছাড়া অন্য কোন ব্যক্তি কি এভাবে গ্রেফতার করতে পারে? যদি পারে তবে কখন? ফৌজদারী আদালত কর্তৃক কোন অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আদালতে হাজিরায় বাধ্য করার জন্য যে সমস্ত পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়ে থাকে তা আলোচনা কর।

যে আইনগত কার্যক্রমের মাধ্যমে অভিযুক্ত ব্যাক্তিকে আটক করে বিচারের জন্য আদালতে উপস্থাপন করা হয় তাকে গ্রেফতার বলে। আমল-অযোগ্য অপরাধের ক্ষেত্রে আদালতের গ্রেফতারী ওয়ারেন্ট ছাড়া কোন আসামীকে গ্রেফতার করা যায়না[ধারা১৫৫] এবং আমলযোগ্য অপরাধের ক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারা বলে পুলিশ অফিসার অপরাধীকে গ্রেফতার করে বিচারের জন্য আদালতে উপস্থিত করেন।
কিভাবে গ্রেফতার করা হয় :
ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৬/১ ধারায় গ্রেফতারের পদ্ধতি সম্পর্কে বলা হয়েছে। কোন একটি গ্রেফতার করতে, গ্রেফতারকারী পুলিশ কর্মচারি বা অন্য ব্যাক্তি, যাকে গ্রেফতার করবেন সেই ব্যাক্তির প্রকৃতপক্ষে দেহ স্পর্শ করবেন বা বন্দী করবেন যদি না সে কথায় বা কাজে আতœসমর্পণ করে কয়েদ স্বীকার করে।
ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৬/২ ধারা অনুযায়ী গ্রেফতারে বাধা প্রদান করলে বা গ্রেফতার এড়াতে চেষ্টা করলে পুলিশ কর্মকর্তা বা অন্য ব্যাক্তি গ্রেফতার কার্যকর করার লক্ষে প্রয়োজনীয় সকল পন্থা অবলম্বন করতে পারবেন।
সুতরাং কোন অপরাধীকে বিচারের জন্য বা আদালতে হাজির করার জন্য তার ব্যক্তি স্বাধীনতাকে খর্ব করে পুলিশের হেফাজতে আনাকে গ্রেফতার বলা হয়।
গ্রেফতারী পরোয়ানা ব্যতীত কখন একজন পুলিশ অফিসার কোন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করতে পারে:
সাধারণত ম্যাজিস্ট্রেটের কাছ থেকে প্রাপ্ত গ্রেফতারী ওযারেন্ট ছাড়া একজন পুরিশ অফিসার আমর অযোগ্য অপরাধের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিকে তার অপরাধের জন্য গ্রেফতার করতে পারে না। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে পুলিশ আমল অযোগ্য অপরাধের জন্য অপরাধীকে গ্রেফতার করতে পারে, ফৌজদারী কার্যবিধির ৫৪ ধারায় ওয়ারেন্ট ছাড়াই পুলিশ কোন ব্যক্তিকে  গ্রেফতার করতে পারে-
কেউ আমলযোগ্য অপরাধের সাথে জড়িত থাকলে বা জড়িত থাকার যুক্তিসঙ্গত অভিযোগ বা সন্দেহ থাকলে;
আইন সঙ্গত কারণ ছাড়া কারও কাছে ঘর ভাঙার সরঞ্জাম থাকলে;
আইন অনুযায়ী বা সরকার আদেশ দ্বারা কাউকে অপরাধী বলে ঘোষণা করলে;
যে ব্যক্তি কাছে চোরাই মাল আছে বলে সন্দেহ করা হয;
পুলিশের কাজে বাধা দিলে, বা কেউ আইনগত হেফাজত থেকে পলায়ন করলে বা করার চেষ্টা করলে;
বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা বাহিনী হতে পলায়ন করেছেন এই মর্মে যৌক্তিক সন্দেহ থাকলে;
যে কাজ বাংলাদেশে করা হলে শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে বিবেচনা করা হত তা বাংলাদেশের বাইরে করে থাকলে;
গুরুতর অপরাধে দন্ডিত ব্যক্তিরা খালাস পাওয়ার পরও তাদের কিছু নিযম মেনে চলতে হয় ,সেই নিযম যারা ভঙ্গ করে;
যেসব আসামী বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেফতারের জন্য অন্য থানা থেকে অনুরোধ করা হলে।

একজন সাধারণ নাগরিক কি একজন অপরাধীকে গ্রেফতার করতে পারেন:
ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৯ ধারা অনুযায়ী একজন সাধারণ নাগরিক একজন অপরাধিকে গ্রেফতার করতে পারে। ৫৯ ধারা অনুযায়ী একজন সাধারণ নাগরিক তার মতে জামিন অযোগ্য ও আমলযোগ্য অপরাধকারী ব্যাক্তিকে অথবা অপরাধী মর্মে ঘোষিত কোন ব্যাক্তিকে গ্রেফতার করতে পারেন এবং অযথা বিলম্ব না করে তাকে পুলিশ অফিসারের নিকট অর্পণ করবেন বা নিকটস্থ থানা হেফাজতে নিয়ে যাবেন। পুলিশ অফিসার যদি তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করার কারণ আছে বলে মানে করেন তাহলে তাকে পুনরায় গ্রেফতার করবেন।
গ্রেফতার করার জন্য পুলিশ কখন আসামীর মৃত্যু পর্যন্ত ঘটাতে পারে:
ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৬ ধারার ৩ উপধারা এবং পুলিশ রেগুলেশন অব বেঙ্গল,১৯৪৩ এর নিয়ম-১৫৩ অনুযায়ী, যেক্ষেত্রে মৃত্যুদন্ড, যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডনীয় কোন আসামীকে গ্রেফতার করার সময় উক্ত আসামী গ্রেফতাররত পুলিশকে আক্রমণ বা বলপ্রয়োগ করে গ্রেফতার প্রতিরোধ করে বা প্রতিরধের চেষ্টাকরে, সেক্ষেতে পুলিশ উক্ত আসামীকে গ্রেফতার করারজন্য গুলি করতে পারে এবং তাতে আসামীর মৃত্যু হলে উক্ত কর্তব্যরত পুলিশের কোন অপরাধ হবেনা।

গ্রেফতারের নিয়মাবলী বা পদ্ধতি সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা হলোঃ
১। ফৌঃ কাঃ আইনের ৪৬ ধারা মোতাবেক কোন ব্যক্তিকে কথা বা কার্য দ্বারা গ্রেফতার করা সম্ভব না হলে তার দেহ স্পর্শ করা যাবে। উক্ত ব্যক্তি যদি মৃত্যুদন্ড বা যাবতজীবন কারাদন্ডে দন্ডিত আসামী বা শাস্তি যোগ্য অভিযুক্ত হয় তবে উক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতার করার জন্য আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা যাবে। পিআরবি-১৫৩ বিধি।
২। ফৌঃ কাঃ বিধি আইনের ৪৭ ধারা মোতাবেক যাহাকে গ্রেপ্তার করা সে ব্যক্তি যে স্থানে প্রবেশ করেছ সে বাড়ীর মালিকের অনুমতি নিয়ে উক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা যাবে।
৩। ফৌঃ কাঃ বিধি আইনের ৪৮ ধারা মোতাবেক বাড়ীর মালিকের অনুমতি পাওয়া না গেলে সে ক্ষেত্রে বাড়ীর দরজা জানলা ভেঙ্গে প্রবেশ করা যাবে ।
৪। ফৌঃ কাঃ বিধি আইনের ৪৯ ধারা মোতাবেক কোন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে গিয়ে বাড়ীর ভিতরে আটকা পড়লে সে ক্ষেত্রে মুক্তি লাভের জন্য বাড়ীর দরজা জানলা ভেঙ্গে বাহির হওয়া যাবে ।
৫। ফৌঃ কাঃ বিধি আইনের ৫০ ধারা মোতাবেক কোন
৬। পুলিশ হেফাজতে হতে কোন আসামী পলায়ন করলে ফৌঃকাঃ আইনের ৫৮, ৬৬ ধারা মোতাবেক পুলিশ অফিসার উক্ত আসামীকে বাংলাদেশের যে কোন স্থান হতে গ্রেফতার করতে পারবে।
৭। ফৌঃ কাঃ আইনের ৫১ ধারা মোতাবেক গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির জামিনের ব্যবস্থা না থাকলে তার দেহ তল্লশী করে পরিধেয় বস্ত্র ব্যতীত যা পাওয়া যাবে তা হেফাজতে নিতে হবে।
৮। ফৌঃ কাঃ ৫২ ধারা।
৯।ফৌঃ কাঃ ৫৩ ধারা।
১০। বিশেষ পরিস্থিতিতে আসামীকে গ্রেফতার করার জন্য ফৌঃ কাঃ আইনের ৪২ ধারা মোতাবেক জনসাধারণের সাহায্য নিয়ে আসামীকে গ্রেফতার করা যাবে। পিআরবি-৩১৬ বিধি।

ফৌজদারী আদালত কর্তৃক কোন অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আদালতে হাজিরায় বাধ্য করার জন্য যে সমস্ত পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়ে থাকে তা আলোচনা:
১ম পদক্ষেপ:ফৌজদারী কার্যবিধির ৬৮ ধারা মতে,আদালত অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে সমন ইস্যু করে পুলিশ কর্তৃক তা জারি করা হবে।
২য় পদক্ষেপ:ফৌজদারী কার্যবিধির ৭৫ ধারা মতে, অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আদালত গেফতারী পরোয়ানা জারি করে পুলিশ কর্তৃক তা কার্যকর করবেন।
৩য় পদক্ষেপ: ফৌজদারী কার্যবিধির ৮৭ ধারা মতে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আদালত হুলিয়া জারি করবেন,আদালত চাইলে তার সম্পত্তিও ক্রোক করতে পারে (ধারা-৮৮)।
৪র্থ পদক্ষেপ: অভিযুক্ত ব্যক্তি যদি দেশের বাইরে পালায়ন করে সে ক্ষেত্রে আদালত ৯৩(খ) ধারা অনুযায়ী ঐ দেশের সংশ্লিষ্ট আদালতে ডাকযোগ ওয়ারেন্ট কার্যকরী করার অনুরোধ জানিয়ে প্রেরণ করবেন।
হুলিয়া বা ক্রোক কি? হুলিয়া বা ক্রোক সংক্রান্ত ফৌজদারী কার্যবিধির বিধানাবলী আলোচনা কর।
হুলিয়া কাকে বলে ?( ডযধঃ রং ঢ়ৎড়পষধসধঃরড়হ? )
হুলিয়া ইংরেজী শব্দ চৎড়পষধসধঃরড়হ বা ঘোষনা। যখন কোন আসামীকে সমন দেয়া হয় বা আদালতে উপস্থিত হওয়ার জন্য বলা হয় অতপর আদালতে হাজির করার জন্য বাধ্য করা হয় তাকে হুলিয়া বলে।
ফৌজদারী কার্যবিধির ৮৭ ধারা অনুযায়ী, কোন আদালতের যদি এইরুপ বিশ্বাস করার কারণ থাকে যে, উক্ত আদালত যার বিরুদ্ধে সমন প্রদান করেছেন সেই ব্যক্তি (সাক্ষ্য গ্রহণের পুর্বে বা পরে) পলাতক রয়েছেন বা সমন যাতে কার্যকর না হতে পারে সে জন্য আতœগোপন করে আছেন, তাহলে আদালত উক্ত ব্যক্তিকে একটি নির্দিষ্ট সময়ে ও নির্দিষ্ট স্থানে ৩০ দিনের মধ্যে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়ে একটি লিখিত ঘোষণা প্রকাশ করতে পারেন। এই ঘোষণা কে হুলিয়া বলা হয়।
উক্ত হুলিয়া যাতে সর্বসাধারণের গোচরে আসে সেই জন্য নিম্নোক্তভাবে প্রকাশ করতে হবেঃ
ক) উক্ত ব্যক্তি যেখানে বাস করে সেই শহর বা গ্রামের প্রকাশ্য স্থানে হুলিয়া পড়ে শুনাতে হবে।
খ) যে গৃহে উক্ত ব্যক্তি সাধারণত বাস করে সেই গৃহের কোন প্রকাশ্য স্থানে উক্ত হুলিয়া টাঙ্গাইয়া দিতে হবে।
গ) সংশ্লিষ্ট আদালতের কোন প্রকাশ্য স্থানে উক্ত হুলিয়া পত্রটির নকল টাঙ্গাইয়া দিতে হবে।
ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ৮৭ ধারাঃ হুলিয়া জারি (পলাতক ব্যক্তি সম্পর্কে ঘোষণা)
(
১) যদি কোন আদালতের এমন বিশ্বাস করার কারণ থাকে যে , উক্ত আদালত যার বিরুদ্ধে পরোয়ানা প্রদান করেছেন সে ব্যক্তি পলাতক হয়েছে, তাহলে উক্ত আদালত তাকে একটি নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট স্থানে ঘোষণা প্রকাশের তারিখ হতে ৩০ দিনের কম নয়, হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়ে একটি লিখিত ঘোষণাপত্র (হুলিয়া) জারি করতে পারেন।
(
২) হুলিয়া নিম্নলিখিত ভাবে প্রকাশ করতে হবেঃ
(
ক) উক্ত ব্যক্তির বাসস্থানের শহরে বা গ্রামের কোন প্রকাশ্য স্থানে হুলিয়াটি পাঠ করতে হবে।
(
খ) উক্ত ব্যক্তির বাসস্থানের প্রকাশ্য স্থানে হুলিয়াটি লটকিয়ে দিতে হবে।
(
গ) হুলিয়ার একটি কপি আদালতের কোন প্রকাশ্য স্থানে লটকিয়ে দিতে হবে।
(
৩) ঘোষণা প্রদানকারী আদালত যদি এই মর্মে একটি লিখিত বিবৃতি দেন যে হুলিয়াটি একটি নির্দিষ্ট দিনে যথাযথভাবে জারি হয়েছে তবে বিবৃতিটি চুড়ান্ত প্রমান্য বলে গণ্য হবে।
ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ৮৮ ধারাঃ ক্রোক (পলাতক ব্যক্তির সম্পত্তি ক্রোক)
(
১) ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ৮৭ ধারা অনুসারে ঘোষণা প্রদাণকারী আদালত যেকোন সময়ই ঘোষিত ব্যক্তির স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক করার আদেশ দিতে পারেন।
(
২) এইরূপ আদেশ যে জেলায় দেয়া হবে সেই জেলার মধ্যে অবস্থিত উক্ত ব্যক্তির যেকোন সম্পত্তি ক্রোক করা যাবে।
এবং অন্য জেলায় উক্ত ব্যক্তির সম্পত্তি থাকলে সেখানকার চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বা চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমোদনক্রমে একই আদেশ দ্বারা উক্ত সম্পত্তিও ক্রোক করা যাবে।
(
৩) যেই সম্পত্তি ক্রোক করার আদেশ দেয়া হয়েছে তা ঋণ বা অস্থাবর সম্পত্তি হলে নিম্নলিখিত ভাবে ক্রোক করতে হবেঃ
(
ক) আটক করে
(
খ) রিসিভার নিয়োগ করে
(
গ) অথবা লিখিত আদেশ দ্বারা ঘোষিত ব্যক্তি বা তার পক্ষে অপর কোন ব্যক্তিকে উক্ত সম্পত্তি প্রদান নিষিদ্ধ করে।
(
ঘ) আদালতের ইচ্ছানুসারে এইরূপ সকল ব্যবস্থা বা যেকোন ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
স্থাবর সম্পত্তি ক্রোকঃ
(
৪) যে সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ দেয়া হয়েছে তা স্থাবর হলে এই ধারানুসারে ক্রোক, সরকারকে রাজস্ব দেয়া জমি হলে সংশ্লিষ্ট জেলার কালেক্টরের মারফত করতে হবে এবং অন্যান্য সমস্ত ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত রূপে করতে হবেঃ
(
ঙ) দখল করে
(
চ) রিসিভার নিয়োগ করে
(
ছ) লিখিত আদেশ দ্বারা ঘোষিত ব্যক্তি বা তার পক্ষে অপর কোন ব্যক্তিকে খাজনা প্রদাণ অথবা সম্পত্তি হস্তান্তর নিষিদ্ধ করে
(
জ) আদালতের ইচ্ছানুসারে এইরূপ সকল ব্যবস্থা বা যেকোন ০২ (দুই) টি ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
(
৫) যে সম্পত্তি ক্রোক করার আদেশ দেয়া হয়েছে তা যদি জীবন্ত প্রাণী বা পচনশীল দ্রব্য হয় তাহলে আদালত প্রয়োজন মনে করলে অবিলম্বে তা বিক্রয়ের আদেশ দিতে পারেন, এবং বিক্রয়লব্ধ অর্থ আদালতের আদেশ অনুসারে ব্যবহৃত হবে।
(
৬) এই ধারা অনুসারে নিযুক্ত রিসিভারের ক্ষমতা, কর্তব্য ও দায়িত্ব, ১৯৮০ সালের দেওয়ানী কার্যকিধির প্রথম তফসিলের চল্লিশ আদেশ অনুসারে নিযুক্ত রিসিভারের ক্ষমতা, কর্তব্য ও দায়িত্বের অনুরূপ হবে।
(
৬-ক) ক্রোকের তারিখ হতে ০৬ মাসের মধ্যে ঘোসিত ব্যক্তি ব্যতীত অপর কোন ব্যক্তি এই ভিত্তিতে ক্রোককৃত কোন সম্পত্তি দাবী করে অথবা ক্রোকের বিরুদ্ধে দাবি উত্থাপন করে যে উক্ত সম্পত্তিতে তার স্বত্ব আছে এবং উক্ত স্বত্ব ক্রোকযোগ্য হয় তাহলে এইরূপ দাবি বা আপত্তি সম্পর্কে তদন্ত করতে হবে এবং উহা সম্পূর্ণ বা আংশিক মেনে নেয়া বা অগ্রাহ্য করা যেতে পারে। তবে শর্ত থাকে যে, এই উপধারায় বর্ণিত সময়ের মধ্যে কোন দাবি বা আপত্তি করা হয়ে থাকলে দাবিদার বা আপত্তিকারীর মৃত্যুর পর তার আইনসঙ্গত প্রতিনিধি উক্ত দাবি বা আপত্তি পরিচালনা করতে পারেন।
(
৬-খ) যে আদালত ক্রোকের আদেশ দিয়েছেন (৬-ক) উপধারা অনুসারে দাবি বা আপত্তি সেই আদালতে করতে হবে।
(
৬-গ) এইরূপ প্রত্যেকটি দাবি বা আপত্তি যে আদালতে করা হয়েছে সেই আদালত এই বিষয়ে তদন্ত করবেন।
(
৬-ঘ) যার দাবি বা আপত্তি (৬-ক) উপধারা মোতাবেক প্রদত্ত আদেশ দ্বারা সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে অগ্রাহ্য করা হয়েছে তিনি বিরোধীয় সম্পত্তিতে তার দাবিকৃত অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য উক্ত আদেশের তারিখ হতে ০১ বৎসরের মধ্যে মামলা দায়ের করতে পারবেন, এবং এই মামলার ফলাফল সাপেক্ষে উক্ত আদেশ চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।
(
৬-ঙ) ঘোষণাধীন ব্যক্তি যদি ঘোষণায় উল্লেখিত সময়ের মধ্যে হাজির হয়, তাহলে আদালত আদেশ দ্বারা সংশ্লিষ্ট সম্পত্তি ক্রোক হতে মুক্ত করে দিবেন।
(
৭) ঘোষণাধীন ব্যক্তি যদি ঘোষণায় উল্লেখিত সময়ের মধ্যে হাজির না হয়, তাহলে ক্রোককৃত সম্পত্তি সরকারের এখতিয়ারভুক্ত হবে, কিন্তু ক্রোকের তারিখ হতে ০৬ মাস অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত এবং (৬-ক) উপধারা অনুসারে কোন দাবি বা আপত্তি করা হয়ে থাকলে তা উক্ত উপধারা অনুসারে নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সম্পত্তি বিক্রয় করা যাবেনা। অবশ্য সম্পত্তি যদি দ্রুত ও স্বাভাবিক ধ্বংসশীল হয়, অথবা আদালত যদি মনে করেন বিক্রয় করা মালিকের জন্য লাভজনক হবে তাহলে আদালত যখন উপযুক্ত বলে মনে করবেন তা বিক্রয়ের ব্যবস্থা করতে পারবেন।
৮৯ ধারাঃ অত্র আইনের ৮৮ ধারা মোতাবেক যে সম্পত্তি ক্রোক করা হয়েছে সেই সম্পত্তি যে আদালতের এখতিয়াধীন রয়েছে সেই আদালত বা সেই আদালত যে আদালতে অধীনে আছে সেই আদালতে হাজির হয়ে ক্রোককৃত ব্যক্তি ক্রোকের তারিখ হতে ২ বছরের মধ্যে হাজির হয়ে যদি এই মর্মে আদালতের সন্তোষ্টি বিধান করতে পারেন যে, সে পলাতক ছিল না বা আতœগোপন করে নাই বা সে কোন প্রকার হুলিয়া নোটিশ পায় নাই তাহলে আদালত তাকে উক্ত ক্রোককৃত সম্পত্তি ফেরত প্রদান করবেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

buttons=(Accept !) days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Learn More
Accept !
To Top