ফোন করে কেউ আপনাকে উত্ত্যক্ত করলে তার বিরুদ্ধে কিভাবে আইনগত একশন নিবেন ??

0
বর্তমান যুগটা হলো ইন্টারনেটের। ইন্টারনেটকে ব্যবহার করে টেলিফোনের মাধ্যমে আমরা একে অন্যের খবরা খবর নিয়ে থাকি। এই টেলিফোনই যখন বিরক্তির কারণ হয় বা কেউ অপব্যবহার করে অন্যজনকে বিরক্তি করলে তখন আপনি উত্যক্তকারীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্তা নিতে পারেন। এই জন্য আপনাকে "বাংলাদেশ টেলিকম্যুনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (BTRC)" তে ফোন করে অভিযোগ করতে হবে। চব্বিশ (২৪) ঘন্টার মধ্যে তারা একশন নিবে এবং তিন (৩) দিনের মধ্যে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আইনের আওতায় নিয়ে আসবে।

বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে কী প্রতিকার রয়েছে ?
টেলিযোগাযোগ আইনের ৭০ ধারায় বলা হয়েছে, বারবার টেলিফোন করে কাউকে বিরক্ত করা বা অসুবিধার সৃষ্টি করাও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এক্ষেত্রে অপরাধীকে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা দিতে হবে। জরিমানার টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হলে তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়ারও বিধান করা হয়েছে।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০০১ ( ২০০১ সনের ১৮ নং আইন )
একাদশ অধ্যায়
অপরাধ, দন্ড, তদন্ত ও বিচার

অশ্লীল, অশোভন ইত্যাদি বার্তা প্রেরণের দণ্ড

৫২[ ৬৯৷ যদি-
(ক) কোন ব্যক্তি টেলিযোগাযোগ যন্ত্রপাতি বা বেতার যন্ত্রপাতির সাহায্যে কোন অশ্লীল, ভীতি প্রদর্শনমূলক বা গুরুতরভাবে অপমানকর কোন বার্তা প্রেরণের উদ্দেশ্যে উক্ত যন্ত্রপাতির পরিচালন কাজে নিয়োজিত ব্যক্তির নিকট প্রস্তাব করেন, বা
(খ)উক্ত প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে দ্বিতীয়োক্ত ব্যক্তি সজ্ঞানে বা ইচ্ছাকৃতভাবে উক্তবার্তা প্রেরণ করেন, বা
(গ) কোন ব্যক্তি চাঁদা আদায়ের উদ্দেশ্যে টেলিযোগাযোগ যন্ত্রপাতি বা বেতার যন্ত্রপাতির সাহায্যে অন্য কোন ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের নিকট অশ্লীল, গুরুতরভাবে অপমানকর, হুমকিমূলক কোন বার্তা বা অন্যকোন ভীতিকর বার্তা বা কোন কথোপকথন বা ছবি বা ছায়াছবি প্রেরণ করেন, তাহা হইলে দফা (ক) এর ক্ষেত্রে প্রস্তাবকারী এবং দফা (খ) এর ক্ষেত্রে প্রস্তাবকারী ও প্রেরণকারীর এই কাজ হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য উক্ত প্রস্তাবকারী বা, প্রেরণকারী বা, ক্ষেত্রমত, উভয়ে অনধিক ২ (দুই) বৎসর কারাদন্ডে বা অনধিক ৫ (পাঁচ) কোটি টাকা অর্থদন্ডে বা উভয় দন্ডে দন্ডনীয় হইবেন এবং দফা (গ) এর ক্ষেত্রে প্রেরণকারী অনধিক ৫ (পাঁচ) বৎসর কারাদন্ডে বা অনধিক ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদন্ডে এবং অনাদায়ে ০৩ (তিন) মাসের কারাদন্ডে দন্ডনীয় হইবেন।]

টেলিফোনে বিরক্ত করার দণ্ড ইত্যাদি

৭০৷(১) কোন ব্যক্তি যুক্তিসংগত কারণ ব্যতীত যদি অন্য কোন ব্যক্তির নিকট এইরূপে বারবার টেলিফোন করেন যে, উহা উক্ত অন্য ব্যক্তির জন্য বিরক্তিকর হয় বা অসুবিধার সৃষ্টি করে, তাহা হইলে এইরূপে টেলিফোন করা একটি অপরাধ হইবে এবং উহার জন্য দোষী ব্যক্তি অনধিক ৫৩[ ১ (এক) লক্ষ টাকা অর্থদন্ডে এবং উহা অনাদায়ে অনধিক ৬ (ছয়) মাস কারাদন্ডে] দণ্ডনীয় হইবেন।
(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লেখিত ধরনের টেলিফোন যাহার নিকট করা হয় তাহার বা তাহার পক্ষে অন্য কাহারো অভিযোগ এবং এতদুদ্দেশ্যে তথাকর্তৃক প্রয়োজনীয় কর্তৃত্ব প্রদানের ভিত্তিতে, পরিচালনাকারী উক্ত উপ-ধারায় বর্ণিত টেলিফোন কলের উৎস চিহ্নিতকরণ, উহার পথরোধ, পরিবীক্ষণ বা বাণীবদ্ধকরণ করিতে বা এইরূপ কল যাহাতে সম্ভব না হয় উহার ব্যবস্থা করিতে পারিবেন৷ )

অপরাধ সংঘটনে সহায়তা, প্ররোচনা ইত্যাদির দণ্ড

৭৪৷ কোন ব্যক্তি এই আইনের অধীন যে কোন অপরাধ সংঘটনে সহায়তা করিলে, অথবা উক্ত অপরাধ সংঘটনে প্ররোচনা দিলে বা ষড়যন্ত্র করিলে এবং উক্ত ষড়যন্ত্র বা প্ররোচনার ফলে অপরাধটি সংঘটিত হইলে, উক্ত সহায়তাকারী ষড়যন্ত্রকারী, বা প্ররোচনাকারী উক্ত অপরাধের জন্য বর্ণিত দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন৷

প্রবিধানে অপরাধ, দণ্ড, ক্ষতিপূরণ সম্পর্কিত বিধান

৭৫৷ কমিশন নিম্নলিখিত বিষয়ে প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে, যথা:-
(ক) প্রবিধানে বা কমিশন কর্তৃক ইস্যুকৃত লাইসেন্স বা পারমিটের শর্ত লংঘনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট লংঘনকে অপরাধরূপে চিহ্নিত করা ও উহার জন্য ক্ষেত্রমত ৬১[ অনধিক ৫ (পাঁচ) বৎসর কারাদণ্ডে বা অনধিক ৩০০ (তিনশত) কোটি টাকা] অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড আরোপ;
(খ) প্রবিধানে বা কমিশন কর্তৃক ইস্যুকৃত লাইসেন্স বা পারমিটের শর্ত লংঘনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির প্রাপ্য ক্ষতিপূরণ এবং উহা আদায়ের পদ্ধতি নির্ধারণ, এইরূপ ক্ষতিপূরণের পরিমাণ হইবে অনধিক ২ (দুই) ৬২[ কোটি] টাকা৷

৫২ ধারা ৬৯ বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ (সংশোধন) আইন, ২০১০ (২০১০ সনের ৪১নং আইন) এর ৩৮ ধারাবলে প্রতিস্থাপিত।
৫৩ "১ (এক) লক্ষ টাকা অর্থদন্ডে এবং উহা অনাদায়ে অনধিক ৬ (ছয়) মাস কারাদন্ডে" সংখ্যা, বন্ধনী ও শব্দগুলি "২৫ (হাজার) টাকা অর্থদন্ডে এবং উহা অনাদায়ে অনধিক ৩ (তিন) মাস কারাদন্ডে" সংখ্যা, বন্ধনী ও
শব্দগুলির পরিবর্তে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ (সংশোধন) আইন, ২০১০(২০১০ সনের ৪১নং আইন) এর ৩৯ ধারাবলে প্রতিস্থাপিত।

আমাদের সমাজের বেশিরভাগ লোকের এই সম্পর্কে ধারণা নেই। সেই জন্য আমরা মুখবুঝে অনেক কিছু সহ্য করে থাকি বা সামাজিক চক্ষু লজ্জার ভয়ে আমরা তা প্রকাশ করি না বা ভয়ের কারণে আমরা পরিবারের বড়দের সাথেও শেয়ার করি না। তাই প্রতিবাদ করুন, প্রতিবাদ করতে শিখুন, ভয়কে জয় করুন এবং অপরাধীকে আইনের হাতে তুলে দিতে সহায়তা করুন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

buttons=(Accept !) days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Learn More
Accept !
To Top