হিন্দু আইনে কিভাবে সম্পত্তি বণ্টন করা হয়, কারা কারা সম্পত্তি পাবেন, পিণ্ডদান কে কে করতে পারেন, সপিণ্ড কি এবং সপিণ্ডর তালিকা:

0

Land Links

More Read পরিমাপ সম্পর্কিত তথ্য

হিন্দু আইনে কিভাবে সম্পত্তি বণ্টন করা হয়, কারা কারা সম্পত্তি পাবেন, পিণ্ডদান কে কে করতে পারেন, সপিণ্ড কি এবং সপিণ্ডর তালিকা:

হিন্দু উত্তরাধিকার আইন ২ ভাগে ভাগ করা হয়েছে:
১। দায়ভাগ;
২। মিতাক্ষরা; বাংলাদেশ এবং ভারতে দায়ভাগ মতবাদ প্রচলিত আছে।

পিণ্ড দান:

দায়ভাগ পদ্ধতিতে পিণ্ডদান মতবাদ দিয়ে উত্তররাধিকারী নির্ণয় করা হয়ে থাকে। পিণ্ড অর্থ হল শরীর: মৃত ব্যক্তির শ্রাদ্ধের সময় মৃত ব্যক্তির পিণ্ড বা শরীরের সাথে রক্ত সম্পর্কীয় উক্তরাধিকারীগন মৃত ম্যক্তির আত্নার কল্যাণে কোন কিছু উৎসর্গ করলে তাকে পিণ্ডদান বলে।

দায়ভাগ মতবাদ অনুসারে উক্তরাধিকারী ৩ প্রকার:
ক। সপিণ্ড,
খ। সকুল্য ও
গ। সমানোদক।

ক। সপিণ্ড:

দায়ভাগ মতে সপিণ্ড হল হিন্দু উত্তরাধিকার আইনে সবচেয়ে নিকটবর্ত উত্তরাধিকারী। যে সকল ব্যক্তি মৃত ব্যক্তির আত্নার কল্যাণের জন্য পিণ্ডদান করেন এবং মৃত ব্যক্তি জীবিত থাকলে যাদের মৃত্যুতে তিনি পিণ্ডদানের যোগ্য ছিলেন তারা সবাই পরস্পরের সপিণ্ড।
পুরুষ সপিণ্ডর সংখ্যা ৪৮জন এবং মহিলা সপিণ্ডর সংখ্যা ৫ জন একুনে সর্বমোট ৫৩ জন সপিণ্ড হবে।
নিম্ন তালিকা অনুসারে সপিণ্ডগন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সম্পত্তির উত্তরাধিকার হবেন:


১। পুত্র,
২। পুত্রের পুত্র,
৩। পুত্রের পুত্রের পুত্র,
৪। স্ত্রী (পুত্রের স্ত্রী/পুত্রের পুত্রের স্ত্রী/পুত্রের পুত্রের পুত্রের স্ত্রী),
৫। কন্যা,
৬। কন্যার পুত্র,
৭। পিতা,
৮। মাতা,
৯। ভ্রাতা, সহোদর ভ্রাতা না থাকলে বৈমাত্রেয় ভ্রাতা,
১০। ভ্রাতুষ্পুত্র, সহোদর না থাকলে বৈমাত্রেয় ভ্রাতার পুত্র,
১১। ভ্রাতুষ্পুত্রের পুত্র, সহোদও ভ্রাতা না থাকলে বৈমাত্রেয় ভ্রাতার পুত্রের পুত্র,
১২। বোনের পুত্র,
১৩। পিতার পিতা,
১৪। পিতার মাতা,
১৫। পিতার ভ্রাতা,
১৬। পিতার ভ্রাতার পুত্র,
১৭। পিতার ভ্রাতা পুত্রের পুত্র,
১৮। পিতার ভগ্নীয় পুত্র,
১৯। পিতার পিতার পিতা,
২০। পিতার পিতার মাতা,
২১। পিতার পিতার ভ্রাতা,
২২। পিতার খুড়ার পুত্র,
২৩। পিতার খুড়ার পুত্র,
২৪। পিতার পিসির পুত্র,
২৫। পুত্রের কন্যার পুত্র,
২৬। পুত্রের পুত্রের কন্যার পুত্র,
২৭। ভ্রাতার কন্যার পুত্র,
২৮। ভ্রাতার পুত্রের কন্যার পুত্র,
২৯। খুড়ার কন্যার পুত্র,
৩০। খুড়ার পুত্রের কন্যার পুত্র,
৩১। পিতার খুড়ার কন্যার পুত্র,
৩২। পিতার খুড়ার পুত্রের কন্যার পুত্র,
৩৩। মাতার পিতা,
৩৪। মামা,
৩৫। মামার পুত্র,
৩৬। মামার পুত্রের পুত্র,
৩৭। মাসির পুত্র,
৩৮। মাতার পিতার পিতা,
৩৯। মাতার পিতার ভ্রাতা,
৪০। মাতার পিতার ভ্রাতার পুত্র,
৪১। মাতার পিতার ভগ্নির পুত্র,
৪২। মাতার পিতার ভগ্নির পুত্র,
৪৩। মাতার পিতার পিতার পিতা,
৪৪। মাতার পিতার পিতার ভ্রাতা,
৪৫। মাতার পিতার পিতার ভ্রাতার পুত্র,
৪৬। মাতার পিতার পিতার ভ্রাতার পুত্রের পুত্র,
৪৭। মাতার পিতার পিতার ভ্রাতার পুত্রের পুত্র,
৪৮। মাতার ভ্রাতার কন্যার পুত্র,
৪৯। মাতার ভ্রাতার পুত্রের কন্যার পুত্র,
৫০। মাতার পিতার ভ্রাতার কন্যার পুত্র,
৫১। মাতার পিতার ভ্রাতার পুত্রের কন্যার পুত্র,
৫২। মাতার পিতার পিতার ভ্রাতার কন্যার পুত্র,
৫৩। মাতার পিতার পিতার ভ্রাতার পুত্রের কন্যার পুত্র।

হিন্দু উত্তরাধিকার আইনে ৫ জন সপি– মহিলা:


১। বিধবা স্ত্রী,
২। কন্যা,
৩। মাতা,
৪। পিতার মাতা,
৫। পিতার পিতার মাতা।

উক্ত ৫ জন জীবনস্বত্ত্ব জমি ভোগ দখল করতে পারেন কিন্তু হস্থান্তর করতে পারেন না। তাদের মৃত্যুর পর উক্ত সম্পত্তি মৃত ব্যক্তির নামে ন্যস্ত হয়ে পুনরায় নিকটস্থ উত্তরাধিকারীর কাছে চলে যায়। তবে বিধবা স্ত্রী অস্বচ্ছল হলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে জমি বিক্রি করতে পারেন।

খ। সকুল্য:

প্রপিতামহের উর্ধ্বতন ৩ পুরুষ সকুল্য নামে পরিচিত। সপি-র ৫৩ জনের কেউ বিদ্যমান না থাকলে সকুল্যগন সম্পত্তির উত্তরাধিকার লাভ করে। সকুল্যেও মোট সংখ্যা ৩৩জন সকলেই পুরুষ।

গ। সমানোদকঃ

সকুল্যের উর্ধ্বতন ৭ পুরুষকে সমানোদক বলে। সপিণ্ড ও সকুল্যের কেউ বিদ্যমান না থাকলে সমানোদকগন উত্তরাধিকার লাভ করে। সমানোকদের সংখ্যা ১৪৭ । এরা সকলেই পুরুষ। সপিণ্ড, সকুল্য ও সমানোদক এ ৩ শ্রেণীর উত্তরাধিকারদের কেউ না থাকলে ধর্মগুরুর নিকট সম্পত্তি চলে যাবে। ধর্মগুরুও না থাকলে সম্পত্তি রাষ্ট্রের (সরকারের) নিকট চলে যাবে।

হিন্দু উত্তরাধিকারের সম্পত্তি বণ্টনের সাধারণ নিয়মঃ

১। সপিণ্ড, সকুল্য ও সমানোদক এর মধ্যে ক্রমানুসারে সম্পত্ত্বি বণ্টন করতে হবে।
২। ১ পুত্র থাকলে সে সকল সম্পত্তি পাবে। একাধিক পুত্র থাকলে সমান ভাগ হবে।
৩। নিকটবর্তী পুরুষ থাকলে পরবর্তী পুরুষ সম্পত্তি পাবে না।
৪। বিধবা স্ত্রী এক পুত্রের সমান অংশ জীবন স্বত্ব পাবে। তার মৃত্যুর পর উক্ত সম্পত্তি পুনরায় পুত্রদের নিকট চলে আসবে। একাধিক বিধবা স্ত্রী থাকলে সকলে একত্রে একপুত্রের সমান সম্পত্তি জীবন স্বত্বে পাবে।
৫। বিধবা পুত্র বধু/বিধবা পৌত্র বধূ থাকলে সে এক পুত্রের সমান জীবনস্বত্ব পাবে। অর্থাৎ বিধবা স্ত্রীর সমান অংশ জীবনস্বত্ব পাবে।
৬। পুত্র, পৌত্র, প্রপৌত্র, বিধবা স্ত্রী, বিধবা পুত্র বধূ/বিধবা পৌত্র বধূ/বিধবা প্রপৌত্র বধূ না থাকলে কন্যা উত্তরাধিকারী হবে। ১ম অবিবাহিত কন্যা পাবে। অবিবাহিত কন্যা না থাকলে পুত্রবতি কন্যা পাবে।
৭। কন্যার পর কন্যার পুত্রগণ এরপর পিতা পরবর্তীতে সপিন্ডের ক্রমানুসারে সম্পত্তি পাবে।

Note: হিন্দু আইনে কিভাবে সম্পত্তি বণ্টন করা হয়, সকলের সাথে শেয়ার করে আইনি বিষয়ে জানতে এবং সচেতন হতে সাহায্য করুন।

Note: অপনি যত আেইন জানবেন, ততই নিজেকে শক্তিশালী অনুভব করবেন।

My FB Page

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

buttons=(Accept !) days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Learn More
Accept !
To Top